ঢাকা রবিবার, ৭ই জুলাই ২০২৪, ২৪শে আষাঢ় ১৪৩১


ছাত্রীকে যৌন হয়রানির করেন বাপ্পী, রাতে মাদকের আসর বসান বিদ্যালয়ে!


৩ জুলাই ২০২৪ ২১:৪০

আপডেট:
৭ জুলাই ২০২৪ ১৮:১১

দিনজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের তরতবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় একটি সুনামধন্য প্রতিষ্ঠান।এই প্রতিষ্ঠান তরতবাড়ী ও আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন।এখান থেকে অনেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অনেক দেশের নামকরা বিদ্যালয় পড়ালেখা করছেন।

এই বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্র শিক্ষকতা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করেছেন।এই সুনামধন্য বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী রাসেল বাপ্পীর বিরুদ্ধে উঠেছে যৌন হয়রানির অভিযোগ।

বাপ্পী পঞ্চম শ্রেনীর কয়েকজন ছাত্রীকে নিয়মিত যৌন হয়রানি করছেন।তার ভয়ে অনেকে কমলমতি শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।তাকে এই বিষয়ে সতর্ক করলেও তিনি ভুক্তভুগি ছাত্রীদের অভিভাবকদের হত্যার হুমকি দিচ্ছেন। বাপ্পী তরতবাড়ী এলাকার বখাটে মাস্তান।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পিছনেই তার বাড়ী হওয়ায় দুর থেকে যাওয়া শিক্ষকেরা তাকে বেশি চাপ দিতে পারছেন না।চাপ দিলে তাদের মারধরের হুমকি দেন বখাটে এই বাপ্পী।

এলাকায় খবর নিয়ে জানা যায়, বাপ্পীর চাপ প্রয়োগ করে তরতবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ নিয়েছেন।তার নিয়োগের পর থেকে অনেক কমলমতি শিশুরা বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

নিয়মিত সে কয়েকজন শিশুকে যৌন হয়রানি করছেন।তাকে কিছু বললে অভিভাবকদের হত্যার হুমকি দেন।প্রতিবাদ করায় কয়েকজন অভিভাবকদের তিনি চড় থাপ্পরও মেরেছেন।রাতের বেলায় তিনি বিদ্যালয় থেকে ইয়াবা ও গাঁজা সাপ্লাই দেন।তার কাছে বিদ্যালয়ের চাবি থাকায় সেখানে অসামাজিক কার্যকলাপও করেন বাপ্পী।

প্রতিবাদ করলে হত্যার হুমকি দেন বাপ্পী।তার ভয়ে চুপ হয়ে থাকতে হয় এলাকার মানুষদের।

 নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন,আমার মেয়ে তরতবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তেন।অফিস সহকারী বাপ্পী নিয়মিত আমার মেয়েকে যৌন হয়রানি করতো।আমি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে এ বিষয়ে অভিযোগ দেই।অভিযোগের খবর শুনে বাপ্পী আমাকে গালে চড় মারেন।

এরপর অভিযোগ করলে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হত্যার হুমকি দেয়।নিরুপায় হয়ে আমি ঐ বিদ্যালয় থেকে মেয়ে নিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে দেই।সে এলাকার বখাটে।

তার সাথে তো কিছু করে আমি কুলিয়ে উঠতে পারবোনা।তাই নিরুপায় চুপ হয়ে রয়েছি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষিকা বলেন,বাপ্পী এলাকার হওয়ায় তাকে কিছু বলা যায় না।তার বিরুদ্ধে অনেক অভিভাবক অভিযোগ দিয়েছেন।তাকে কিছু বললে আমাদের উপর তেড়ে আসেন।বেশি কথা বললে আমাদের এখানে চাকুরি করতে দিবেন না বলে হুমকি দেন।নিরুপায় হয়ে আমরা চুপ থাকি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যাক্তি বলেন,এলাকার বখাটে বাপ্পী।সে সব সময় মানুষের সাথে ভেজাল করে বেড়ায়।বিদ্যালয়ে রাতে মাদকের আসর বসান বাপ্পী।অসামাজিক কার্যকাপাও করেন বিদ্যালয়ে।মাদক বিক্রি ও অসামাজিক কার্যকলাপের সময় আমরা হাতে নাতে কয়েকবার তাকে ধরেছি।সে আমাদের হত্যার হুমকি দেয়।সে অনেক ছাত্রীকে যৌন হয়রানি করে আমাদের কাছে এমন অভিযোগ বার বার আসছে।কিন্তু সে বখাট হওয়ায় তাকে কিছু বলা হয়না।

এ বিষয়ে বাপ্পী বলেন,আমি এলাকার স্থানীয়।আমার মন যা চায় সেটাই করবো।কেউও এগুলো নিয়ে বাড়াবাড়ি করলে হাত পা ভেঙ্গে দেবো।

 এ বিষয়ে বীরগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আবুল কালাল আজাদ বলেন, তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।