ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


সেতু না বানিয়ে দেড় কোটি টাকা মেরে দিলেন দুই ভাই


১৬ মার্চ ২০২১ ০৬:০১

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০৩:৫৬

বরগুনার আমতলীতে সেতু নির্মাণ না করেই এক কোটি ৪৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় এক ইউপি চেয়ারম্যান ও এলজিইডির তিন প্রকৌশলীসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। সোমবার (১৫ মার্চ) বরগুনার বিশেষ জজ আদালতে মামলাটি করেন আইনজীবী মো. মহসীন।

আদালতের বিচারক মো. হাসানুল ইসলাম মামলাটি গ্রহণ করে দুদকের বরগুনা ও পটুয়াখালীর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালককে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে; তা আগামী ২৭ এপ্রিল আদালতকে জানাতে বলা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন আমতলী উপজেলার চাওড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. বাদল খান, তার ছোট ভাই আলমাস খান, এলজিইডি বরগুনার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হুদা, এলজিইডি আমতলী উপজেলার সাবেক প্রকৌশলী মো. আতিয়ার রহমান, সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম এবং সাবেক হিসাবরক্ষক আনসার আলী।

এদের মধ্যে আতিয়ার রহমান বর্তমানে তহসিল অফিস নির্মাণ প্রকল্পে ঢাকায় চুক্তিভিত্তিক কর্মরত আছেন। সাইফুল ইসলাম কর্মরত আছেন বরগুনার বামনা উপজেলার প্রকৌশলী হিসেবে। হিসাবরক্ষক আনসার আলী কর্মরত আছেন এলজিইডির পটুয়াখালী সদর উপজেলায়।

মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, আমতলী উপজেলার হলুদিয়া ইউনিয়নে এলজিইডির অর্থায়নে এক কোটি ছয় লাখ ১০ হাজার ২১০ টাকা ব্যয়ে ৯১ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের কাজ পান বাদল খান। সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেখানো হয় ১ অক্টোবর ২০০৭ এবং কাজ শেষ হওয়ার তারিখ দেখানো হয় ১ অক্টোবর ২০০৮। অথচ সেতু নির্মাণ না করেই টাকা ভাগাভাগি করে নেন আসামিরা।

অপরদিকে একই ইউনিয়নে এলজিইডির অর্থায়নে ৪১ লাখ ৯ হাজার ৭৪২ টাকা ব্যয়ে ২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের আরেকটি সেতু নির্মাণের কাজ পান বাদল খানের ভাই আলমাস খান। এই সেতু নির্মাণের কার্যাদেশ দেখানো হয় ১ জানুয়ারি ২০০৯ এবং কাজ সমাপ্তের তারিখ দেখানো হয় ৩০ জুন ২০০৯। কিন্তু সেতু নির্মাণ না করেই প্রকল্পের টাকা তুলে ভাগাভাগি করে নেন আসামিরা।

মামলার বাদী ও আইনজীবী মো. মহসীন বলেন, ঠিকাদার কাজে অনিয়ম করেন; এটি ভিন্ন বিষয়। কিন্তু কাজ না করেই দুটি সেতুর টাকা গায়েব করে দেয়ার মতো দুর্নীতি মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, সেতু লুকিয়ে রাখা যায় না। তারা পুকুর চুরিকেও হার মানিয়েছে। তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া দরকার। একজন সচেতন মানুষ হিসেবে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য আমি মামলা করেছি।

এ বিষয়ে মামলার আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আমাদের কাছে সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত রয়েছে। এজন্য মামলাটি আমলে নিয়ে দুদকের বরগুনা ও পটুয়াখালীর সমন্বিত কার্যালয়ের উপপরিচালককে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।