রাস্তার পাশাপাশি মেট্রোস্টেশনে আন্দোলনকারীদের অবস্থান, ভোগান্তিতে যাত্রীরা

নিজেদের ৬ দফা দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় পরিষদ। কর্মসূচিতে এক হাজারেরও বেশি আন্দোলনকারী অংশ নেন। এসময় তারা রাস্তা অবস্থানের পাশাপাশি সচিবালয় মেট্রোস্টেশনের কনকোর্স প্লাজায়ও চলে যায়। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ে মেট্রোরেলের যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীরা। এসময় তারা স্বাভাবিকভাবে স্টেশনে প্রবেশ ও বের হতে বাধাগ্রস্ত হয়।
রবিবার (২৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ৬ দফা দাবি আদায়ে বাংলাদেশ বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় পরিষদ আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে এমন চিত্র দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে এসে আন্দোলনকারীরা সচিবালয় স্টেশনের কনকোর্স প্লাজায় অবস্থান করছে। একদল ফ্যানের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছেন। একদল বাইরে সিঁড়িতে বসে, আবার কেউ কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। আন্দোলনকারীদের মেট্রোস্টেশনে এই অবস্থানের ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন মেট্রোরেলের যাতায়াতকারী সাধারণ যাত্রীরা। তারা স্বাভাবিকভাবে স্টেশনে যাতায়াত করতে পারছিল না। এরমধ্যে প্রেসক্লাবের পাশের স্টেশনের গেইট বন্ধ করে দেওয়ায় যাত্রীদের উঠতে-নামতে হয়েছে অন্যপাশের গেট দিয়ে। এই পরিস্থিতিতে ভোগান্তির শিকার হয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনেক যাত্রী।
এসময় মেট্রোস্টেশনে মেহেদী হাসান নামের এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তারা আন্দোলন করবে নিচে, রাস্তায়। তাদের উপরে কি? তারা রাস্তায়ও থাকবে আবার উপরেও থাকবে! এটা কী ফাজলামো নাকি? যেখানে ইচ্ছা সেখানেই তারা থাকবে। যেদিকে আমার নামার দরকার সেদিকে নামতে পারছি না তাদের জন্য, ঘুরে নামতে হচ্ছে।
স্টেশনে অবস্থানরত এক আন্দোলনকারীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, নিচে রাস্তায় জায়গা নেই তাই আমরা ওপরে এসে বসেছি।
এদিকে স্টেশনে আন্দোলনকারীদের অবস্থান প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক আখিল উদ্দিন বলেন, হ্যাঁ আমরা এটা দেখেছি। এবিষয়ে আমরা অবগত আছি। বিষয়টি আমরা দেখছি। আমাদের ভলেন্টিয়ারদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সবাইকে যেন নিচে ফিরিয়ে নিয়ে আসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মেট্রোরেল সচিবালয়ে দায়িত্বরত স্টেশন কন্ট্রোলার বলেন, আন্দোলনকারীরা নিচে থেকে ওপরে চলে আসছিল। তারা কনকোর্স প্লাজায় এসে বসে ভিড় জমিয়ে ফেলেছে। বসে খাওয়া-দাওয়াও করা শুরু করে। পরে আমরা তাদের বের করে দিয়ে একপাশের (প্রেস ক্লাবের পাশের) গেইট বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হয়েছি। কারণ এখানে নিরাপত্তার বিষয় রয়েছে।
বাংলাদেশ হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশনের ৬ দফা দাবিগুলো হলো
১। নিয়োগবিধি সংশোধন করে স্নাতক বা সমমান এবং ১৪ তম গ্রেড প্রদান।
২। ইনসার্ভিস ডিপ্লোমা প্রশিক্ষণ সনদ প্রাপ্তদের ১১তম গ্রেড প্রদানসহ টেকনিক্যাল পদমর্যাদা প্রদান।
৩। পদোন্নতির ক্ষেত্রে ধারাবাহিকভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড নিশ্চিত করতে হবে।
৪। স্বাস্থ্য সহকারী, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক, স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ পূর্বের নিয়োগবিধি দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত হলেও সবার প্রশিক্ষণবিহীন স্নাতক পাশ স্কেলে আত্তীকরণ করতে হবে।
৫। বেতন স্কেল উন্নতি বা পুনঃনির্ধারণের পূর্বে স্বাস্থ্য সহকারী বা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক বা স্বাস্থ্য পরিদর্শকগণ যত সংখ্যক টাইম স্কেল (১/২/৩ টি) অথবা উচ্চতর স্কেল (১/২ টি) প্রাপ্ত বা প্রাপ্য হয়েছেন, তা উন্নীত পুনঃনির্ধারিত বেতন স্কেলের সঙ্গে যোগ করতে হবে।
৬। পূর্বে ইন সার্ভিস ডিপ্লোমা (এস আই টি) কোর্স সম্পূর্নকারী স্বাস্থ্য সহকারী বা সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক বা স্বাস্থ্য পরিদর্শকেরা ডিপ্লোমা সম্পন্নকারী সমমান হিসেবে গণ্য করতে হবে।