প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,
প্রচুর অর্থ ছড়িয়ে নির্বাচনকে পক্ষে নেওয়ার পরিকল্পনা বিএনপির!

আসন্ন জাতীয় সংসদের নির্বাচনি প্রচারণায় বিএনপির ঢিলেঢালাভাবকে সন্দেহ প্রকাশ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপি কিছু একটা ষড়যন্ত্রে আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের কোনো একটা দুরভিসন্ধি আছে। আজকে খবর পেলাম। তারা নাকি ভুয়া ব্যালট ছাপাচ্ছে। নির্বাচনের ঠিক তিন চারদিন আগে প্রচুর অর্থ ছড়িয়ে নির্বাচনকে তাদের পক্ষে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।’
বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সুধাসদন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে চারটি জেলায় নির্বাচনি জনসভায় বক্তব্য দেওয়ার সময় এসব কথা বলেন।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে সুধাসদন থেকে বিভিন্ন জেলায় ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হয়ে নৌকার ভোট প্রার্থনার পাশাপাশি নৌকা ও মহাজোটের প্রার্থীদের জয়যুক্ত করার আহ্বান জানাচ্ছেন শেখ হাসিনা। এ লক্ষ্যে আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নিয়াজ মোহাম্মদ হাইস্কুল মাঠ, কক্সবাজার জেলার কক্সবাজার স্টেডিয়াম, চট্টগ্রাম মহানগরের লালদিঘী ময়দান ও পিরোজপুর জেলার স্বাধীনতা মঞ্চে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত নির্বাচনি জনসভায় অংশগ্রহণ করেন।
সুধাসদন প্রান্তে যৌথভাবে সভা পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং আব্দুর রহমান। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়াসহ অনেকে।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাচনি জনসভায় সংযুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নের গতিটা ধরে রাখতে হলে নৌকা মার্কায় ভোট দিতে হবে। যাতে আমরা কাজগুলো করতে পারি। আমরা চাই না, বাংলাদেশে খুনীর দল ক্ষমতায় আসুক। অস্ত্র চোরাকারবারী, মানি লন্ডারিং, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ যারা করে, যারা মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করে, এরা যেন আর ক্ষমতায় না আসতে পারে। এরা আসা মানে দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া। আমরা দেশের ধ্বংস চাই না আমরা উন্নয়ন চাই। আমরা অশান্তি চাই না, শান্তি চাই।’
এ ছাড়া অগ্নিসন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক এবং দুর্নীতর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে অঙ্গীকার করেন। পাশাপাশি নির্বাচনি ইশতেহারে দুর্নীতি, মাদক, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে নৌকা ও মহাজোটের প্রার্থীকে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোট দিয়ে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
এরপর কক্সবাজার জেলার নৌকার প্রার্থী ও স্থানীয় বক্তব্য রাখেন এবং নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানিয়ে এলাকাবাসীর কাছে ভোট প্রার্থনা করেন। এর এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি, বিএনপি তাদের কোনো প্রচারণায় নেই, কিছুই নেই। কিছু একটা ষড়যন্ত্রে তারা আছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তারা একটা ষড়যন্ত্রে আছে। তাদের হাজার হাজার কোটি টাকা। বড় চোর, মহাচোর, খুনী-দাগী চোর তো একটা বসে আছে লন্ডনে। ওখানে বসে ষড়যন্ত্র করছে আর এখানে তাদের দোসররা আছে। তারা ষড়ন্ত্র করে যাচ্ছে। তাদের কোনো একটা দুরভিসন্ধি আছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
‘কোথায় কোনো প্রেসে তারা জাল ব্যালট ছাঁপায় সেটা খুঁজে বের করতে নেতা-কর্মীসহ জনগণকে আহ্বান জানানা। এ ছাড়াও তারা অগ্নি সন্ত্রাস করতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এরা এই ধরনের ষড়যন্ত্র করবে। দরকার হলে নিজের গাড়ি বা অফিসে আগুন দিয়ে আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করবে। এই ধরনের চক্রান্তে তারা ব্যস্ত হয়ে গেছে। আরও কিছু ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত আছে। সবাই প্রত্যেকে খোঁজ নেন কোথায় তারা কোন ব্যালট পেপার ছাপায়। কারণ ওদের অভ্যাস আছে। এই ধরনের অপকর্ম বিএনপি-জামায়াই পারবে। তাই এই নির্বাচনেও কিছু একটা করতে পারে।’
এ লক্ষ্যে নেতা-কর্মীসহ জনগণকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো রকম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তারা যেন করতে না পারে, জনগণকেই প্রতিহত করতে হবে। কারণ মানুষ যদি ঘুরে দাঁড়ায় তাহলে তারা পারবে না। নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে চায়। কারণ ভোটটা তার অধিকার। ভুয়া ব্যালট পেপার চক্রান্ত করে, সন্ত্রাস করে বা টাকা ছড়িয়ে তারা যেন জনগণের এই রায় কেড়ে নিতে না পারে তাই দেশবাসী ও নেতা-কর্মীকে সক্রিয় ও সজাগ থাকার আহ্বান জানান।’
এ ছাড়া পিরোজপুর ডিজিটাল জনসভায় সংযুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যাদের মনোনয়ন দিয়েছি নিশ্চয়ই তাদের জেতার জন্য পার্টির লোকেরা কাজ করবে। তবে আপনারা সাবধানে কাজ করবেন। কারণ বিএনপি কিছু ষড়যন্ত্র করছে, আজকে খবর পেলাম। তারা নাকি ভুয়া ব্যালট ছাপাচ্ছে। আর ঠিক নির্বাচনের তিন চার দিন আগে প্রচুর টাকা ছড়িয়ে তারা নির্বাচনটাকে তাদের পক্ষে নেবার পরিকল্পনা করছে।’