ঢাকা মঙ্গলবার, ১৫ই এপ্রিল ২০২৫, ২রা বৈশাখ ১৪৩২


আজ চৈত্র সংক্রান্তি


১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪৯

আপডেট:
১৩ এপ্রিল ২০২৫ ১১:৪৯

ফাইল ছবি

আজ চৈত্র মাসের শেষদিন—চৈত্র সংক্রান্তি। বাংলা বছরের অন্তিম প্রান্তে দাঁড়িয়ে এই দিনটি ঘিরে গড়ে উঠেছে বাঙালির এক গৌরবময় সংস্কৃতির ঐতিহ্য। আগামীকাল সোমবার পহেলা বৈশাখের মধ্য দিয়ে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২-এর সূচনা হবে।

চৈত্র সংক্রান্তি কেবল একটি দিনের নাম নয়—এটি একটি আবহমান বাংলার ঐতিহ্যবাহী অনুভূতির প্রকাশ। বছরের শেষ দিনটি পুরনোকে বিদায় জানানোর এবং নতুনকে স্বাগত জানানোর এক বিশেষ উপলক্ষ। এই দিনটির সঙ্গেই জড়িয়ে আছে বাঙালির নানা উৎসব-অনুষ্ঠান, যা পহেলা বৈশাখ উদযাপনের পূর্বপ্রস্তুতি হিসেবেও বিবেচিত হয়। ফলে চৈত্র সংক্রান্তি হয়ে ওঠে বাঙালির অন্যতম অসাম্প্রদায়িক উৎসব।

এই দিনে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ধর্মীয় বিধি অনুসারে স্নান, দান, ব্রত ও উপবাস পালন করেন। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও তাদের নিজস্ব বিশ্বাস ও সংস্কৃতির আলোকে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

চৈত্র সংক্রান্তিকে ঘিরে গ্রামবাংলায় জমে ওঠে উৎসবের রঙ। আয়োজিত হয় হালখাতা, গ্রামীণ মেলা, লাঠিখেলা, লোকগান, সংযাত্রা, রায়বেশে নাচ, শোভাযাত্রাসহ নানা রকমের আয়োজনে মুখরিত হয়ে ওঠে গ্রামীণ জনপদ।

সবচেয়ে আকর্ষণীয় আয়োজন হলো চড়ক উৎসব। গাজনের অন্যতম এই অংশে গ্রামীণ শিবতলা থেকে শোভাযাত্রা বেরিয়ে যায় অন্য গ্রামের শিবতলায়। শিব ও গৌরীর সাজে দুজন নৃত্য করেন, তাদের সঙ্গে নেচে চলে নন্দি-ভৃঙ্গী, ভূত-প্রেত, দৈত্য-দানব সেজে থাকা ভক্তরাও। এতে মিশে থাকে আধ্যাত্মিকতা, লোকজ সংস্কৃতি ও বর্ণিল আনন্দ।

চৈত্র সংক্রান্তি যেন একটি প্রতীক—পুরনোকে বিদায় আর নতুনকে আলিঙ্গনের। নতুন বছরের প্রথম প্রভাতে বাঙালি জাতি মিলিত হবে নবআশার আলোর খোঁজে। বিষাদ, ক্লেশ, জীর্ণতা ও অন্ধকার পেছনে ফেলে সবাই পথ ধরবে ঐক্য, আনন্দ ও আলোকিত আগামীর দিকে।