ঢাকা শুক্রবার, ১৭ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে নিলামে বিক্রি সামগ্রী চুরির অভিযোগ!


১৮ এপ্রিল ২০২১ ২৩:২০

আপডেট:
১৭ মে ২০২৪ ১২:৪৪

পুরান ঢাকার মৌলভীবাজার কমিউনিটি সেন্টার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এর পুরনো মালামাল বিক্রির জন্য নিলাম ডাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। নিলামে ওঠা ওই মালামাল রাতের আঁধারে লুট করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ৩১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছেন খোদ ঠিকাদারই। করপোরেশন বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ডিএসসিসি সূত্র জানায়, মৌলভীবাজার কমিউনিটি সেন্টার ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ওই স্থানে নতুন একটি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করার কথা। এর আগে ওই সেন্টারের পুরনো মালামাল বিশেষ করে দরজা-জানালা, গ্রিল, সেনেটারি সামগ্রী, ইলেকট্রিক সরঞ্জাম বিক্রির জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছিল। গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত নিলামে রাইতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান সর্বোচ্চ দরদাতা (৭ লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৭ টাকা) হয়। তবে নিলাম হওয়ার পর রাতের আঁধারে কমিউনিটি সেন্টারটির মালামাল খুলে নিয়ে যায় একটি চক্র।

সম্প্রতি কমিউনিটি সেন্টারটি ঘুরে দেখা যায়, ভবনটিতে দরজা-জানালা কিছু নেই। বাথরুমের কমোড, বৈদ্যুতিক ও লোহার কোনো জিনিসপত্রও নেই। সর্বত্র ভাঙাচোরা, স্থানে স্থানে গর্ত। আশপাশের দোকানিরা জানান, রাতেরবেলা এসব সামগ্রী ভেঙে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।


ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রাইতা ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মালিক আবদুল আউয়াল মানিক অভিযোগ করেন, টেন্ডারে অংশ নিতেই বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলমগীর। এর পরও আমি টেন্ডারে অংশ নিই এবং সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নিয়মানুযায়ী কাজ পাই। কিন্তু রাতের আঁধারে সব মালামাল লুট করে নিয়ে যায় কাউন্সিলরের লোকজন। যিনি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছিলেন, তিনি কাউন্সিলর আলমগীরের পছন্দের ব্যক্তি।

আবদুল আউয়াল মানিক আরও বলেন, কমিউনিটি সেন্টারের প্রতিটি জানালা, দরজা, গ্রিল, সেনেটারি ও ইলেকট্রিক মালামাল, ওয়াশরুমের বেসিন থেকে শুরু করে কমোড সব খুলে নিয়ে গেছে। বলতে গেলে এখন বিক্রি করার মতো কিছুই নেই। স্থানীয় কাউন্সিলরের নেতৃত্বে এমন জঘন্য কাজ হয়েছে। আমি বিষয়টি করপোরেশনকে লিখিত জানিয়ে বিচার দাবি করব।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ডিএসসিসির ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শেখ মোহাম্মদ আলমগীর। তিনি বলেন, মালামাল লুটপাটের যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা কেবলই আমার সম্মানহানির জন্য। দীর্ঘদিন ধরে কমিউনিটি সেন্টারটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। তিন মাস ধরে আমি সেখানে যাই না। অনেক পুরনো ভবন। তেমন কিছুই নেই। ডিএসসিসি সেখানে গড়ে মূল্য ধরেছে দুই লাখ টাকা। সেখানে ওই প্রতিষ্ঠান প্রায় আট লাখ টাকা দিয়ে নিলামে সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছে। এখন আবার অভিযোগ তুলছে মালামাল চুরি হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, মূলত ওই ঠিকাদার কালো টাকা সাদা করতেই দুই লাখ টাকার মাল আট লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। এখানে দুই কোটি টাকা লাভ দেখিয়ে টাকা সাদা করবে।

এ বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরীন বলেন, বিষয়টি জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করা হবে। এমন ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।