ঢাকা রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


আ.লীগ ব্যবসা করে না, ব্যবসায়ীদের সুযোগ করে দেয়


২৩ নভেম্বর ২০১৮ ০৯:১২

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ২১:০২

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার পুনরায় নির্বাচিত হলে চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে আধুনিক ট্যানারি ও স্বতন্ত্র চামড়াশিল্প অঞ্চল গড়ে তোলা হবে। সরকার ইতিমধ্যে শিল্পাঞ্চলের উপযোগী স্থান নির্ধারণে কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে নিজেরা ব্যবসা করে না। ব্যবসায়ীদের জন্য ব্যবসার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়।

প্রধানমন্ত্রী আজ বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ লেদার ফুটওয়্যার অ্যান্ড লেদার গুডস ইন্টারন্যাশনাল সোর্সিং শো’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা চামড়াশিল্পের নেতাদের বলেন, আমি নির্বাচিত হলে শিল্পাঞ্চল ও ট্যানারি নির্মাণ করব। অন্যথায় আপনারা নিশ্চিত করবেন যে নতুন সরকার এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। প্রধানমন্ত্রী নবনির্মিত বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রত্যেকটিতে বিশেষ করে চামড়াশিল্পের জন্য একটি করে স্থান রাখতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।

দেশে বিভিন্ন চামড়াশিল্প গড়ে তোলায় ব্যবসায়ীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চামড়াজাত পণ্য বাংলাদেশেই তৈরি হচ্ছে, যেগুলো তাঁরা তাঁদের দেশে নিয়ে গিয়ে ফিনিশিং দিয়ে মার্কেটে দিচ্ছেন। তিনি চামড়া ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে বলেন, এই কাজগুলো যেন আরও ভালোভাবে করা যায়, আপনারা তা খেয়াল রাখবেন। এ জন্য যা কিছু সহযোগিতা দরকার, আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে, আমরা তা করব।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘এই সেক্টরটিকে আমি মনে করি বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র। সেই সম্ভাবনাটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। সেই দিকে দৃষ্টি দিয়েই আমাদের সব রকম ব্যবস্থা নিতে হবে।’ রপ্তানি বাস্কেট বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, ‘সব সময় আপনাদের মাথায় রাখতে হবে আরও কোন কোন দেশে আমরা রপ্তানি করতে পারি। কোন দেশের চাহিদা কী, কোথায় আমরা আমাদের রপ্তানিটা বাড়াতে পারি। তাহলে আমাদের উৎপাদনও যেমন বাড়বে, দেশের মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে, ব্যবসায়ীদের ব্যবসা এবং রপ্তানি উভয়ই বৃদ্ধি পাবে।’

কূটনীতি ছিল পলিটিক্যাল, এখন ইকোনমিক্যাল
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নিজেরা ব্যবসা করে না বরং ব্যবসায়ীদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। তিনি জানান, এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই তাঁর সরকার সব দেশের রাষ্ট্রদূত এবং হাইকমিশনারদের বাংলাদেশে ডেকে তাঁদের করণীয় বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করেছে। শেখ হাসিনা বলেন, ‘একসময় কূটনীতিটা ছিল পলিটিক্যাল আর এখন হয়ে গেছে ইকোনমিক্যাল। কী ধরনের বিনিয়োগ আমাদের দেশে আসতে পারে, সেটাকেই খুঁজে নিয়ে আসা এবং সেভাবেই কাজ করতে হবে।’

রাজধানীর হাজারীবাগসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ছিটিয়ে থাকা ট্যানারি শিল্পসমূহকে একটি পরিবেশবান্ধব জায়গায় স্থানান্তরের জন্য ঢাকার সাভারে ধলেশ্বরী নদীর তীরে ২০০ একর জমিতে চামড়াশিল্প নগরী স্থাপনের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে ১১৫টি ট্যানারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান উৎপাদন শুরু করেছে। তবে এটাকে আরও আধুনিকায়ন করা দরকার। এ সময় চামড়া সংগ্রহে কসাইদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে ব্যবসায়ীদের উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাহলে সংগ্রহকালে একটি বড় অংশ যে নষ্ট হয়ে যায়, তা আর নষ্ট হতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে আনা জার্মান ব্র্যান্ড পিকার্ডের তৈরি চামড়ার ভ্যানিটি ব্যাগ দেখিয়ে বলেন, এটি বাংলাদেশে তৈরি এবং জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলকেও তিনি এটা দেখিয়েছেন যে এসব পণ্যও বাংলাদেশে তৈরি হচ্ছে। তিনি বিদেশে যেখানেই যান এসব বাংলাদেশি পণ্য সঙ্গে করে নিয়ে যান বলে উল্লেখ করেন।

তাঁর সরকারের সময় দেশে একের পর এক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়, ফ্যাশন ডিজাইন বিশ্ববিদ্যালয়, মেরিটাইম ও ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় এবং টেকনিক্যাল ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে সময়ের প্রয়োজনটা জেনে নিয়ে সেভাবে আমাদের হালনাগাদ হওয়ার দরকার।’

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব শুভাশিষ বসু, এফবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন। এতে লেদার গুডস অ্যান্ড ফুটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারাস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সভাপতি সফিউল ইসলাম স্বাগত বক্তব্য দেন।