ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


পচছে পেঁয়াজ চড়ছে দাম


১৭ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:০৩

আপডেট:
১৯ মে ২০২৪ ০১:২৯

দামের উল্লম্ফনে বিভিন্ন জেলায় জরিমানা, ক্রয়মূল্যের রসিদ দেখাতে রাজি না পাইকার-খুচরা বিক্রেতারা

পেঁয়াজ সংকটে দিশেহারা ভোক্তারা। বর্তমানে বিশ্বের সর্বোচ্চ দামে বাংলাদেশে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর (৬ জানুয়ারি-১৬ নভেম্বর) ১৭ গুণের বেশি ও গত পাঁচ মাসে (২৩ জুলাই-১৬ নভেম্বর) সাড়ে ছয় গুণ বেড়ে গতকালও রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে পণ্যটি ২৬০ টাকা দরে কেজি বিক্রি হয়েছে। তবে চট্টগ্রামে খাতুনগঞ্জের আড়তদাররা গত দুই দিনে ১৫ টনের বেশি পেঁয়াজ ভাগাড়ে ফেলেছেন, পচা-বাছাই করা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন, আর শুক্রবার রাত থেকে গতকাল বিকেল পর্যন্ত খাতুনগঞ্জে ২৪০ টন মিয়ানমারের পেঁয়াজ এসেছে। তবু ব্যবসায়ীরা সরবরাহ

সংকটের অজুহাতে গতকালও পণ্যটি বিক্রি করেছেন অস্বাভাবিক দামে। পণ্যটির দামের এমন উল্লম্ফনেও বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দলের ভেতরে ও বাইরে সমালোচিত হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ দেশের অভিযান শুরু হয়েছে, বেশি দামে বিক্রি করায় করা হচ্ছে জরিমানা। তবে ক্রয়মূল্যের রশিদ দেখাতে পারছেন না পাইকার-খুচরা বিক্রেতারা। তাদের অনেকের ভাষ্য, আমদানিকারকরা রশিদ ছাড়া পেঁয়াজ দিচ্ছেন। বিভিন্ন জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্বে থাকা ম্যাজিস্ট্রেট জানিয়েছেন, বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। আর মজুদদার চক্র ভাঙতে গোয়েন্দা তৎপরতার খবরও জানা গেছে। ভোক্তাদের অভিযোগ, এত দাম বাড়ার পরও এতদিন কেন অভিযান বন্ধ ছিল?

মিসরের পেঁয়াজ বিমানে আসছে মঙ্গলবার : আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, এস আলম গ্রুপের আমদানি করা মিসরের পেঁয়াজের প্রথম চালান আকাশপথে আগামী মঙ্গলবার দেশে পৌঁছাবে। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে এই পেঁয়াজ খালাস করা হবে বলে জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গতকাল শনিবার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, অর্থ ছাড়ে বিলম্বের কারণে যেন পেঁয়াজ আমদানিতে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষণিকভাবে চাহিদা মতো অর্থ ছাড় করা হবে।

গতকাল রাজধানীর পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৩০, মিয়ানমার ২২০ এবং চীন, মিসর ও তুরস্কের ২০০ টাকা দরে। এছাড়া নুতন দেশি মুড়ি কাটা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১৮০ টাকা কেজি দরে। তবে এর পরিমাণ খুবই কম। হাতেগোনা কয়েকটি দোকানে এই পেঁয়াজ ছিল। বাজারে দেখা যায়, গত আগের দিনের মতোই বেশিরভাগ দোকানে দেশি পেঁয়াজ নেই। এদিন রাজধানীর খুচরা বাজারে পেঁয়াজের দাম ছিল আগের দিনের মতো চড়া, কেজি ২৬০ টাকা।

দুই দিনে ১৫ টনের বেশি পচা পেঁয়াজ ভাগাড়ে ফেলে বেপরোয়া খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা :  চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিস জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত খাতুনগঞ্জ সংলগ্ন চাক্তাই খালপাড়, কর্ণফুলী নদীতে, অভয়মিত্র ঘাট, ব্রিজঘাট পাড়ে ফেলা হয়েছে বস্তা বস্তা পচা পেঁয়াজ। শুক্রবার রাতে নগরীর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা সেই পেঁয়াজ নিয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থানার আরেফিননগরে আবর্জনাগারে ফেলছেন। খাতুনগঞ্জে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিটি আড়তেই কমপক্ষে ১০০ বস্তা করে পেঁয়াজ নষ্ট হয়েছে। প্রথমে ফেলে দিলেও এখন এসব পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। ৩৫ নম্বর বক্সিরহাট ওয়ার্ডের পরিচ্ছন্নতা পরিদর্শক আহমদ ছফা বলেন, গত দুদিনে ১৫ টনের মতো পচা পেঁয়াজ ভাগাড়ে পাঠিয়েছে হামিদুল্লাহ মার্কেট ও মধ্যম চাক্তাই এলাকার ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইদ্রিচের দাবি, এসব পেঁয়াজ মিয়ানমার থেকে নৌকায় পরিবহনের সময় পানি লেগে নষ্ট হয়েছে আর কিছু পেঁয়াজ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের সময় আড়তে পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে, গরমেও নষ্ট হয়েছে। গতকাল শনিবার খাতুনগঞ্জ ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ দোকানের সামনে পচা পেঁয়াজও বিক্রি করছেন আড়তদাররা। আর আড়তগুলোর ভেতরে মজুদ করা রয়েছে মিসর, চীন ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ।

পেঁয়াজ মজুদের বিষয়ে খাতুনগঞ্জ হামিদুল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাজি মো. ইদ্রিচ বলেন, সরবরাহ সংকটে দাম বাড়ছে, সেখানে মজুদ রাখা হবে কীভাবে। সব খুচরা ব্যবসায়ীরা খাতুনগঞ্জে ভিড় করেছেন পেঁয়াজ কিনতে। কিন্তু মিয়ানমারের পেঁয়াজের অধিকাংশই পচা-গলা।

তবে গতকাল বিকেলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ সিকদারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শুরু হলে ব্যবসায়ীরা কেনার দামের রসিদ দেখাতে পারেননি। অথচ একাধিকবার বৈঠকে ব্যবসায়ীরা অঙ্গীকার করেছিলেন মূল্য রসিদ ছাড়া কোনো পেঁয়াজ তারা আমদানিকারকের কাছ থেকে কিনবেন না। এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুস সামাদ সিকদার সাংবাদিকদের বলেন, আমদানিকারক-মজুদদারদের নির্ধারিত দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ।

খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানান, গত শুক্রবার রাত ও শনিবার বিকেল পর্যন্ত এই বাজারে ২৪০ টন মিয়ানমারের পেঁয়াজ এসেছে। গতকাল খাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের পেঁয়াজের পাইকারি দর ছিল কেজিপ্রতি ২২০, মিসর ১৬০-১৮০ ও চীন ১৪০-১৪৫ টাকা। খুচরা বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকা দরে।

চুয়াডাঙ্গায় দুই ব্যবসায়ীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা, ম্যাজিস্ট্রেট অবরুদ্ধ, সাংবাদিক-পুলিশ লাঞ্ছিত : আমাদের চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রির অভিযোগে গতকাল দুপুরে জেলার শহরের পাইকারি আড়ত বড় বাজারে (নিচের বাজার) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (এনডিসি) সিব্বির আহমেদ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আমজাদ হোসেনের নেতৃত্বে অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত দুটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করে। এর মধ্যে নাফিসা বাণিজ্যালয় ২০ হাজার ও জাহাঙ্গীর বাণিজ্যালয়কে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় উত্তেজিত হয়ে ব্যবসায়ী ও তাদের লোকেরা নির্বাহী দুই ম্যাজিস্ট্রেটকে ঘিরে ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে। অভিযানে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে উত্তেজিত ব্যবসায়ীরা পুলিশ সদস্যদের ওপরও মারমুখী হয়ে ওঠেন। লাঞ্ছিত করেন দুই পুলিশ সদস্যকে। এ দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করার সময় হামলা চালিয়ে এস এম সাফায়েত নামে স্থানীয় এক সংবাদকর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। তার কাছে থাকা ক্যামেরাও ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ-সাংবাদিকদের উদ্ধার করেন। আহত সংবাদকর্মী এস এম শাফায়েত জানান, অভিযানের খবর পেয়ে তিনি ও তৌহিদুর রহমান তপু নামে দুই সংবাদকর্মী ঘটনাস্থলে গেলে তাদের মারধর করেন ব্যবসায়ীরা। তার মোবাইলও ভেঙে ফেলেছেন ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে জেলার সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার জানান, বাজার মনিটরিং করার সময় ব্যবসায়ীরা যে ঘটনার জন্ম দিয়েছেন তা ন্যক্কারজনক। অবশ্যই এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা দোকান মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইবরুল হাসান জোয়ার্দ্দার ইবু বলেন, ভুল বোঝাবুঝি থেকে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বাজার পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। সংবাদ সংগ্রহের সময় দুই সংবাদকর্মী ওপর হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন জেলা প্রেস ক্লাব। ক্লাবের সভাপতি মানিক আকবর ও সাধারণ আরিফুল ইসলাম ডালিম যৌথ এক বিবৃতিতে এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন।

খুলনায় ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা : আমাদের খুলনা অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় গতকাল জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত নগরীর বড় বাজারে মো. হযরত আলী নামের এক ব্যবসায়ীকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। ম্যাজিস্ট্রেট জানান, গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রামের পেঁয়াজের ব্যাপারী হযরত আলী খুলনার বড় বাজারের মোকামে এক গাড়ি পেঁয়াজ নিয়ে আসেন। তিনি কিনেছেন ১৫৬ টাকা দরে কেজি। ট্রাক ভাড়া, আনুষঙ্গিক খরচ মিলে প্রতি কেজির মূল্য দাঁড়ায় ১৭৬ টাকা। তবে তিনি পেঁয়াজের কেজি ২১০-২২০ টাকা দরে বিক্রির নির্দেশ দেন। এই অভিযোগে তাকে ১ লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ৩ মাসের কারাদ- প্রদান করা হয়। জরিমানার টাকা তাৎক্ষণিকভাবে আদায় করা হয়েছে।

কুষ্টিয়ায় পুলিশ সুপারের অভিযানে দাম কমল ৪০ টাকা : আমাদের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, জেলার বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের কেজি ২১০-২২০ টাকায় বিক্রি হওয়ার খবরে গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাত পৌর বাজারে অভিযান পরিচালনা শুরু করেন। অভিযানের শুরুতেই পণ্যটির দাম কেজিতে ২০-৪০ টাকা পর্যন্ত কমান খুচরা বিক্রেতারা।

ব্যবসায়ীকে সতর্ক করে পেঁয়াজের কেজি ২০০ টাকার মধ্যে বিক্রির নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। তিনি বলেন, অভিযানের শুরুতেই পেঁয়াজের দাম কমিয়েছে ব্যবসায়ীরা। এভাবে জেলার সব বাজারে অভিযান চালানো হবে।

মাদারীপুরে ৬ দোকানিকে জরিমানা : আমাদের মাদারীপুর সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলায় প্রকারভেদে পেয়াঁজের কেজি ২২০-২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ খবরের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত জেলার সদর উপজেলার মস্তফাপুরে অভিযান চালিয়ে ৩ দোকানিকে ৪ হাজার টাকা করে এবং জেলা শহরের পুরান বাজার, কুলদ্বীপ, চৌরাস্তা এলাকায় ৩ দোকানিকে ৮ হাজার টাকা করে জরিমানা করেছে। জানা গেছে, এই অভিযান চলমান থাকবে।

গাইবান্ধায় ৫ পেঁয়াজ ব্যবসায়ীকে জরিমানা : আমাদের গাইবান্ধা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় গত শুক্রবার রাতে জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা শহরের গোলাপবাগ কাঁচাবাজারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রামকৃষ্ণ বর্মনের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ৫ ব্যবসায়ীকে সাড়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন। ওই ব্যবসায়ীরা হলোÑ মুকুল মিয়া, আইনুল ইসলাম, জহুরুল ইমলাম, মো. জব্বার মিয়া ও আবু বক্কর সিদ্দিক। তাদের বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার পান্তাপাড়াসহ আশপাশের এলাকায়। ইউএনও রামকৃষ্ণ বর্মন বলেন, মুকুল মিয়া ও আইনুল ইসলাম পেঁয়াজ কেনার ক্যাশমেমো না দেখাতে পারায় ও মূল্য তালিকা টাঙিয়ে না রাখায় ভোক্তা অধিকার আইনে দুই হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া অন্যরা প্রতি কেজি পেঁয়াজ ১৮০-১৯০ টাকায় কিনে ২৩০-২৪০ টাকায় বিক্রি করায় প্রত্যেককে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

দেবীদ্বারে পাঁচ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা : আমাদের কুমিল্লা অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, গতকাল বেলা ১১টার দিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলামের নেতৃত্বে কুমিল্লার দেবীদ্বার সদরের নিউ মার্কেটে অভিযানে পাঁচ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে মোট ২২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা, বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি, মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি ও মজুদ রাখা, ওজনে কারচুপিসহ নানা অভিযোগে এ জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে অতিরিক্ত মূল্য রাখায় রুহুল আমিনের পেঁয়াজের দোকান ৫ হাজার, হাবিবের পেঁয়াজের দোকান ৫ হাজার, মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করায় আবু হানিফের পেঁয়াজের দোকান ২ হাজার, ওজনে কারচুপি করায় নবী মিয়ার মাংসের দোকান ২ হাজার এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ সরবরাহ ও বিক্রি করায় সরকারি হাসপাতাল গেইট সংলগ্ন মাতৃছায়া ফার্মেসিকে ৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

লক্ষ্মীপুরে ৪০ বস্তা পেঁয়াজ জব্দ ও গোডাউন সিলগালা : আমাদের প্রতিনিধি জানিয়েছেন, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে পৌর শহরের গেঞ্জিহাটা রোডের মুদি দোকানি মাইন উদ্দিন তার গোডাউনে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৪০ বস্তা (১৬০০ কেজি) পেঁয়াজ রাখায় তা জব্দসহ গোডাউনটি সিলগালা করে দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া কার্তিক চন্দ্র সাহার একটি পাইকারি দোকানে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করায় ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শফিকুর রিদোয়ান আরমান শাকিল।

লালমনিরহাটে ২০ কেজি ধানের দামে ১ কেজি পেঁয়াজ : আমাদের সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলার কালীগঞ্জ, পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার হাটবাজারে গতকাল পেঁয়াজের কেজি ২৫০-২৬০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এদিকে প্রতি মণ মোটা ধান ৫০০-৫১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। এ হিসাবে ২০ কেজি ধানের দামে বিক্রি হচ্ছে এক কেজি পেঁয়াজ। এক ভোক্তা জানান, প্রতি সপ্তাহে তার পরিবারের জন্য ৩ কেজি পেঁয়াজ লাগে। এভাবে চলতে থাকলে সংসার চালানো সম্ভব হবে না। কৃষক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমরা কৃষক। পেঁয়াজ বিক্রির সময় দাম পাইনি। এখন লোকসানে ধান বিক্রি করে বেশি দামে পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রতিবাদে রাজশাহীতে ওয়ার্কার্স পার্টির মানববন্ধন : আমাদের রাজশাহী অফিসের নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, গতকাল নগরীর সাহেববাজারে ২৫০ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ার প্রতিবাদে এবং কঠোরভাবে বাজার নজরদারি করার দাবিতে গতকাল শনিবার সকালে মহানগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি।