ছাত্রদল সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা
খালাস পাওয়া ১২ ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ছাত্র আবিদুর রহমানকে ছাত্রদলকর্মী সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা মামলায় বেকসুর খালাস দেওয়া ১২ আসামিকে আত্মসমর্পণের আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মুনসুরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী শিশির মনির ও আজিমুদ্দিন পাটোয়ারি। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট ওজি উল্লাহ্, ইয়াছিন আলফাজ ও মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম।
নিহত আবিদ কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার উত্তর বড়ইতলী গ্রামের নরুল কবির চৌধুরীর ছেলে। তিনি চমেকের ৫১তম ব্যাচের বিডিএস তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
আসামিরা হলেন- ছাত্রলীগ নিয়ন্ত্রিত ছাত্রসংসদের সাবেক সহ-সভাপতি (ভিপি) মফিজুর রহমান জুম্মা, ছাত্রলীগ শাখার সভাপতি সোহেল পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক বিজয় সরকার, সহ-সাধারণ সম্পাদক হিমেল চাকমা, ফেরদৌস রাসেল, শান্ত দেবনাথ, মাহাফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, দেবাশীষ চক্রবর্তী, রাশেদুর রহমান সানি, সালমান মাহমুদ রাফসান ও মোস্তফা কামাল।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই আসামিদের বেকসুর খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেন পঞ্চম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ (ইনচার্জ) জান্নাতুল ফেরদেীস চৌধুরী। ওই রায়ের বিরুদ্ধে গত ১৬ এপ্রিল ক্রিমিনাল রিভিশন আবেদন করেন। ২০৪৭ দিন পর ক্রিমিনাল রিভিশন করায় এ আদেশ দেন উচ্চ আদালত।
তথ্য বলছে, শিক্ষার্থীদের মাঝে জনপ্রিয়তা থাকায় আবিদকে ছাত্রদলকর্মী বলে সন্দেহ করতেন চমেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ২০১১ সালের ১৯ অক্টোবর দুপুর ২টা, সন্ধ্যা ৭টা ও রাত ১০টায় তিন দফায় তাকে পেটান তারা। এমনকি চিকিৎসার সুযোগ না দিয়ে তার বোনের বাসায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। বোনের বাসা থেকে চমেক হাসপাতালে নিলেও বাধা দেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
ওই বছরের ২১ অক্টোবর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় ছাত্রলীগের তৎকালীন ২২ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেন আবিদের মামা নেয়ামত উল্লাহ। মামলার তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১২ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এর মধ্যে বাকি ১০ আসামি অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি পান।