ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


লোভনীয় চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিয়ে প্রতারণা, গ্রেফতার ১১


১ নভেম্বর ২০১৮ ২৩:৪৮

আপডেট:
১৮ মে ২০২৪ ১০:৩৫

লাইফওয়ে বাংলাদেশ লিমিটেড প্রথমে পত্রিকায় চাকরির বিজ্ঞপ্তি দিত। চাকরি প্রত্যাশীদের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হতো। বড় বড় কোম্পানিতে লোভনীয় পদে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে প্রথমে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা জামানত, পরে ১৫ দিনের প্রশিক্ষণের নামে আরও কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়া হতো। এর পরের শর্ত হলো, নতুন আরও ক’জনকে আনতে হবে- যারা বিনিয়োগ করবে। এসব প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর বেরিয়ে আসত কোম্পানির নতুন রূপ। চাকরিতো কেউ পেতই না, বরং চাকরি ও জমা দেওয়া টাকা ফেরৎ চাইলে শুরু হতো শারীরিক-মানসিক নির্যাতন। প্রতারিত হয়ে চাকরি প্রত্যাশী সাধারণ ছেলে-মেয়েদের ফিরতে হতো শূন্য হাতে।

লাইফওয়ে কোম্পানির ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি)। এরপরই বেরিয়ে আসে প্রতারণার এসব তথ্য। মঙ্গলবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার (ঢাকা মহানগর) মো. এনামুল কবির জানান, প্রতারণার শিকার হয়ে কয়েকজন অভিযোগ করলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকায় গাজী টাওয়ারের তৃতীয় তলা থেকে লাইফওয়ে কোম্পানির কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন, তপন কুমার মালো ও রাকিব হাসানকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য নিয়ে গত ১৭ অক্টোবর একই এলাকা থেকে মোজাফ্ফর নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি।

এনামুল কবির বলেন, লাইফওয়ে কোম্পানি নতুন করে গাজীপুরে প্রতারণা করছে এমন তথ্য পাই আমরা। গতকাল (২৯ অক্টোবর) গাজীপুরের বাসন এলাকায় লাইফওয়ে অফিস থেকে আরও সাত জনকে গ্রেফতার করা হয়। জব্দ করা হয় ১০টি কম্পিউটার এবং অন্যান্য জিনিসপত্র।

এরা হলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মো. ইসমাইল হোসেন (৩০), পাবনা ঈশ্বরদীর আরিফুল হক পলাশ (৩০) ও মো. সাদ্দাম হোসাইন (২৫), নাটোর বড়াইগ্রামের মো. লিটন রনি (২৫) ও আ. কাদের (৩৫), সিরাজগঞ্জ কাজীপুরের মো. আ. ছালাম (২৬) ও নেত্রকোণার কলমাকান্দার মাসুদ রানা (৩১)।

সিআইডি‘র অনুসন্ধানে আরও বেরিয়ে আসে, আসামিরা একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। বেকার যুবকদের চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে তারা প্রতারণা করে আসছিল। বিভিন্ন এলাকায় তারা স্বল্প সময়ের জন্য অফিস ভাড়া নিয়ে ট্রেনিং সেন্টার খুলতো। তারপর মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেত। প্রতারণার বিষয়টি কেউ আগেই ধরে ফেললে তাকে ভয়-ভীতি দেখানো হতো বলেও অভিযোগ রয়েছে। এই চক্রের মাস্টারমাইন্ডকে খোঁজা হচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার বলেন, ওরা ঠিক ‘ডেসটিনির’ মতো না, তবে ওদের কাজের সঙ্গে ডেসটিনির কাজের মিল ছিল। ডেসটিনি মানুষকে কিছু পণ্য দিত। এরা কোনো পণ্যও দিত না। আদালত এই ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করার পর লাইফওয়ে বাংলাদেশ লিমিটেড হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করে। আদালতের সেই কাগজপত্র দেখিয়ে তারা বিশ্বাস অর্জন করতো। আমরা উচ্চ আদালতেও প্রতিবেদন দেবো- এই ধরনের প্রতিষ্ঠান রিট করলে কোনোভাবেই যেন রায় তাদের পক্ষে না যায়।