অবশেষে ঢাবিতে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে সেই হৃদয় সরকার

মায়ের কোলে চড়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আসা ‘সেরিব্রাল পালসি’তে আক্রান্ত হৃদয় সরকার অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত ডিন’স কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- নিয়মের গ্যাঁড়াকলে থমকে যাবে মা-ছেলের লড়াই!
ডিনস কমিটির বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সদস্য সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তারা বলেন, বৈঠকে ঢাবি ভর্তিতে বাক, শ্রবণ ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর বাইরেও শারীরিক প্রতিবন্ধী ভর্তিচ্ছুদের প্রতিবন্ধী কোটা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে, ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করেও শ্রবণ, বাক বা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী না হওয়ায় হৃদয় প্রতিবন্ধী কোটা পাননি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে। গত মঙ্গলবার (সোমবার দিবাগত মধ্যরাতে) সারাবাংলা’য় এ নিয়ে খবর প্রকাশ হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। চিকিৎসকসহ মানবাধিকারকর্মী ও সংশ্লিষ্টরা বলেন, সরকারি আইন অনুযায়ী শ্রবণ, বাক ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীর বাইরেও যারা প্রতিবন্ধী, তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে প্রতিবন্ধী কোটা না পাওয়াটা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য রীতিমতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এর একদিন পরই হৃদয়কে ভর্তির সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো ঢাবি প্রশাসন
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কলা অনুষদের অন্তর্ভুক্ত ‘খ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন নেত্রকোনার হৃদয় সরকার। ‘সেরিব্রাল পালসি’তে আক্রান্ত হৃদয় এসেছিলেন মায়ের কোলে চড়ে। ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে হৃদয় মেধাক্রম পান ৩৭৪০।
সোমবার (৫ নভেম্বর) দুপুর ২টায় কলা অনুষদে ‘খ’ ইউনিটে উত্তীর্ণ ওয়ার্ড, খেলোয়াড় ও প্রতিবন্ধী কোটাধারীদের মনোনয়ন সংগ্রহের জন্য ডাকা হয়। অনুষদের ওয়েবসাইটে দেখা যায়, ৯ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধীকে ডাকা হয়েছে মনোনয়ন সংগ্রহের জন্য। এর মধ্যে ৪৫৮৪ মেধাক্রমেও রয়েছেন একজন। কিন্তু ৩৭৪০ মেধাক্রমে থেকেও হৃদয় সরকার মনোনয়ন সংগ্রহের ডাক পাননি।
ওই সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, নিয়ম অনুযায়ী দৃষ্টি, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধীদের জন্যই কেবল প্রতিবন্ধী কোটা বরাদ্দ ঢাবিতে। এর বাইরে অন্য কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধীর জন্য ঢাবিতে কোনো কোটা দেওয়া হতো না। এই নিয়ম অনুযায়ী সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েও হৃদয়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ঢাবিতে ভর্তির দরজা। তা নিয়ে সারাবাংলার কাছে হতাশাও জানান ছোট বেলা থেকেই শিক্ষার জন্য সংগ্রাম করে আসা হৃদয়।
শেষ পর্যন্ত আজ (বৃহস্পতিবার) ঢাবি প্রশাসন হৃদয়কে প্রতিবন্ধী কোটায় ভর্তির সুযোগ দেওয়ায় তার সেই হতাশা কেটে যাবে নিঃসন্দেহে।