সেনা-পুলিশ পাহারায় এনবিআরে ফিরলেন চেয়ারম্যান

রাজস্ব ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণার তিন দিন পর সেনা ও পুলিশ পাহারায় নিজের কার্যালয়ে ফিরেছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
রোববার বিকাল ৪টার দিকে এনবিআর চেয়ারম্যান রাজধানীর আগারগাঁওয়ের রাজস্ব ভবনে প্রবেশ করেন; তখন সেনাবাহিনীর তিনটি গাড়িও সেখানে দেখা যায়। তারও আগে থেকে চেয়ারম্যানের কার্যালয় এবং ভবনটির সামনে পুলিশের সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা যায়। সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের মেজর ফুয়াদ আল ইসলামের নেতৃত্বে একটা দলকে পরে তার কার্যালয়েও ঢুকতে দেখা গেছে।
বেঁধে দেওয়া তিন দিনের মধ্যেও চেয়ারম্যানকে অপসারণ না করায় গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ করেছিল ঐক্য পরিষদ। গত ১২ মে রাতে এনবিআরকে ভাগ করে ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। পরদিন থেকে তা বাতিলের দাবিতে অবস্থান ও কলমবিরতি কর্মসূচি পালন শুরু করেন দেশের প্রধান রাজস্ব আহরণকারী সংস্থাটির কর্মীরা।
আন্দোলনের সময় চেয়ারম্যানকে আর রাজস্ব ভবনে দেখা যায়নি। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের (আইআরডি) সচিব হিসেবে সেখানেই তিনি এতদিন অফিস করে আসছিলেন।
চেয়ারম্যান রাজস্ব ভবনে প্রবেশ করতে চান, কয়েকবার এমন কথা শোনা গেলে কর্মকর্তারা তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিলে তিনি আর আসেননি। তখন থেকেই সাংবাদিকদের এড়িয়ে চলছেন চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান। বাজেটের দিন ঘনিয়ে আসায় তিনি মুঠোফোনে যোগাযোগ করে কাজ চালিয়ে এসেছেন; সবশেষ শুক্রবারও তার বাসায় বাজেটের কাজ চলেছে বলে এনবিআরের কর্মকর্তারা বলেছেন।
এদিকে এনবিআরকে দুই ভাগ করার অধ্যাদেশ নিয়ে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে ‘অসহযোগ’ কর্মসূচি পালন করছেন। কর্মীদের আন্দোলনের মুখে অর্থ মন্ত্রণালয় বলেছে, এনবিআর বিলুপ্ত নয়, বরং এ প্রতিষ্ঠানকে ‘স্বাধীন ও বিশেষায়িত’ বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
সেজন্য ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ওই অধ্যাদেশে সংশোধন করা হবে। এনবিআর, রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি এবং ‘গুরুত্বপূর্ণ’ অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে বলে মন্ত্রণালয় প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
সরকার দাবি মানার আশ্বাস দিলে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গত ২৫ মে রাতে কর্মবিরতিসহ সকল কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। তবে এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবি না মানায় নতুন করে সময় বেঁধে দেন তারা। সেই সময় পার হয়ে গেলে চেয়ারম্যানকে রাজস্ব ভবনে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে ঐক্য পরিষদ।