ঢাকা বুধবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৫, ১১ই বৈশাখ ১৪৩২


সাতক্ষীরায় ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে মাছ ব্যবসায়ী: দুই যুবতী গ্রেফতার


২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২৩

আপডেট:
২১ এপ্রিল ২০২৫ ১৩:২৪

 

সাতক্ষীরায় ভয়ঙ্কর ব্ল্যাকমেইল চক্রের ফাঁদে ফেলে এক মাছ ব্যবসায়ীকে জিম্মি করে অর্থ আদায়ের ঘটনায় দুই নারীকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। রোববার রাতে শহরের শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কের পেছন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নারীরা হলেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বিনেরপোতা এলাকার মুজিবুর রহমানের মেয়ে জোৎস্না খাতুন (২৬) ও আশাশুনি উপজেলার গোনাকরকাটি গ্রামের বিল্লাল হোসেনের মেয়ে মুন্নি খাতুন (২৫)। তারা দু’জনই স্বামী পরিত্যক্তা বলে জনা গেছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে শহরের মুনজিতপুর একাডেমী মসজিদ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা শহরের বড়বাজারের এক মাছ ব্যবসায়ী। তিনি জানান, ‘এক সময় তার ভাড়াটিয়া ছিলেন জোৎস্না খাতুন। পূর্বপরিচয়ের সূত্রে তিনি তার কাছ থেকে মাঝে মাঝে বাকিতে মাছ নিতেন। সেই ধারাবাহিকতায় রোববার বিকেলে মাছের বকেয়া ১৩০০ টাকা পরিশোধের কথা বলে তাকে মুনজিতপুর একাডেমী মসজিদ এলাকায় ভাড়া বাসায় ডেকে নেন জোৎস্না’। মিজানুর রহমান আরো জানান, ‘আমি ঘরে ঢুকেই বুঝে যাই ফাঁদে পড়েছি। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ৮-১০ জন যুবক আমাকে ঘিরে ধরে মারধর শুরু করে। আমার হাত বেঁধে রাখে এবং ২ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে অসামাজিক কাজের অভিযোগে ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরে অনেক অনুনয়ের পর ৩৫ হাজার টাকায় রফা হয়। পরে আমি আমার শ্যালক নুরুর কাছে কল দিয়ে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে আসতে বলি। তখন নুরু টাকা নিয়ে আসলে ৮/১০ জনের মধ্যে একজন আমার মোবাইল নিয়ে গিয়ে বাসার বাহির থেকে আমার শালা নুরুর থেকে টাকা নিয়ে আসেন। পরিবারের সহায়তায় টাকা জোগাড় করে মুক্তি পেয়ে ঘটনার পরপরই থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত দুই নারীকে আটক করে’। ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান আরও বলেন, ‘এই দুই নারী দীর্ঘদিন ধরে শহরে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তারা পুরুষদের টার্গেট করে ব্ল্যাকমেইল করে অর্থ আদায় করে থাকে। আমি নিজে তার শিকার হয়েছি। প্রশাসনের কাছে আমার একটাই অনুরোধ এই চক্রের মূলহোতাদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক’। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামিনুল হক বলেন, ‘মাছ ব্যবসায়ীর অভিযোগের ভিত্তিতে দুই নারীকে অটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’। এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে শহরের স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা বলছেন, ‘এ ধরনের বø্যাকমেইল চক্র এখনই রুখে না দিলে আরও সাধারণ মানুষ এর শিকার হতে পারে। এ ঘটনায় শহরের সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে’।