কুড়িগ্রাম রৌমারী উপজেলায় বড়াইবাড়ী দিবস পালিত: জাতীয় স্বীকৃতির দাবিতে এলাকাবাসী ও সাবেক সেনাদের জোরালো আওয়াজ

২০০১ সালের ঐতিহাসিক সীমান্ত সংঘর্ষের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে অনুষ্ঠিত হয় শহীদদের স্মরণে র্যালি, পুষ্পস্তবক অর্পণ, দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভা।
“ওয়াহিদ, কাদের, মাহফুজ শহীদদের-আমরা তোমায় ভুলি নাই” এই প্রতিপাদ্যে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী জনপদ বড়াইবাড়ীতে ১৮ এপ্রিল (শুক্রবার) পালিত হলো বড়াইবাড়ী দিবস।
সকাল ১০টায় বড়াইবাড়ী সীমান্তে বিডিআর ও এলাকাবাসীর প্রতিরোধে শহীদ হওয়া বীরদের স্মরণে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সাবেক এমপি রুহুল আমিন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, সাংবাদিক, সামাজিক সংগঠনের সদস্য ও সহস্রাধিক মানুষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কর্নেল মো. জয়নাল আবেদীন (অব.) বলেন, "সেদিন সীমান্তের সাহসী সন্তানেরা ভারতীয় আগ্রাসনের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছিল। আজও সেই প্রতিরোধ অনুপ্রেরণা হয়ে আছে।”
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও লেখক আবু রুশদ বলেন, "একসময় আমাদের দমন করা হতো, এই দিবসে অংশ নিতে পারতাম না। এখন সময় বদলে গেছে , এই দিবসকে জাতীয়ভাবে উদ্যাপনের
স্বীকৃতি চাই।”
আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন: ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাইদুর রহমান বীর প্রতীক (অব.), কর্নেল মো. জাকারিয়া হোসেন (অব.), মেজর মো. জামাল হায়দার (অব.), মেজর মো. আব্দুর রব (অব.), প্রফেসর মো. তসলিম উদ্দিন, ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক, জেলা বিএনপি সদস্য মো. আজিজুর রহমান, রাজিবপুর উপজেলা বিএনপি আহ্বায়ক মো. মোখলেছুর রহমান, প্রধান শিক্ষক মো. আহসানুল হক সাদা, মো. রেজাউল ইসলাম রিজু প্রমুখ।
২০০১ সালের ১৮ এপ্রিল ভোরে ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) বাংলাদেশে অনধিকার প্রবেশ করে বড়াইবাড়ী গ্রামে হামলা চালায়। ঘুমন্ত গ্রামবাসীর উপর নরকীয় তাণ্ডব চালানো হয়, পুড়ে যায় ৮৯টি ঘর বাড়ি। এতে বিডিআর ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত প্রতিরোধে ১৬ বিএসএফ সদস্য নিহত হয় এবং শহীদ হন বাংলাদেশের ৩ বীর সেনা-
১. ল্যান্স নায়েক ওয়াহিদুজ্জামান (৩৩ রাইফেলস)
২. সিপাহী মাহফুজুর রহমান
৩. সিপাহী আব্দুল কাদের (২৬ রাইফেলস)
আহত হন আরও পাঁচজন। সরকারের হিসাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৭২ লাখ টাকা।
বক্তারা শহীদ পরিবারদের বীরের মর্যাদা প্রদান এবং দিবসটিকে জাতীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়।