চাকরি করেছেন দেড় বছর, এর মধ্যেই ৩০ লাখ টাকা লোপাটের অভিযোগ

বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে উন্নয়ন কাজ না করেই চেয়ারম্যান ও সদস্যের স্বাক্ষর জাল করে প্রায় ৩০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। টের পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েল জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খৃষ্টফার হিমেল রিছিল মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদনে সত্যতা পেলে আইনি ও বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়ার ধুনট উপজেলার চিকাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েল অভিযোগে উল্লেখ করেন, নজরুল ইসলাম ২০২৩ সালের ২ জুলাই তার ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ইউপি সচিব) হিসেবে যোগদান করেন। সোনালী ব্যাংক ধুনট শাখায় চিকাশি ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিল নামে হিসাব রয়েছে। হিসাবটিতে লেনদেন হতো ইউপি চেয়ারম্যান, সদস্য শাহানা আকতার ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের স্বাক্ষরে। তিনি (নজরুল ইসলাম) উন্নয়ন সহায়তা খাতে কোনও কাজ না করেই চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েল ও সদস্য শাহানা আকতারের স্বাক্ষর জাল করেন।
এতে উল্লেখ করেন, গত ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংক থেকে ইউনিয়ন উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের ৯ লাখ ৭৪ হাজার ৬৩৮ টাকা, ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে একই ব্যাংক থেকে একই তহবিলের ১৩ লাখ ৯০ হাজার ৬৭৪ টাকা ও ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পাঁচ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। তিনি ৩০টি চেকের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে মোট ২৯ লাখ ৪০ হাজার ৮১২ টাকা উত্তোলন করেছেন।
চেয়ারম্যান আরও অভিযোগ করেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম ২০২৪ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিকাশি ইউনিয়নে কর্মরত ছিলেন। এরপর পার্শ্ববর্তী শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়ন পরিষদে একই পদে বদলি হন। তিনি বদলি হওয়ার পর পরিষদের উন্নয়ন সহায়তা তহবিলের অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি টের পাওয়া যায়। এ বিষয়ে তিনি (চেয়ারম্যান) গত ১২ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব, বগুড়া জেলা প্রশাসক ও ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ধুনট উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খায়রুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সদস্যরা হলেন- উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা।
চেয়ারম্যান জাকির হোসেন জুয়েল বিকালে জানান, তদন্ত কার্যক্রম শুরুর পর সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামকে হাজির হতে গত ৬ মার্চ চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি চিঠি পাওয়ার পরও হাজির হননি। তাকে পরবর্তী আগামী ১৭ এপ্রিল হাজির হতে দ্বিতীয় দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বর্তমানে শেরপুর উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি ধরেননি।