ঢাকা সোমবার, ৭ই এপ্রিল ২০২৫, ২৫শে চৈত্র ১৪৩১


ময়মনসিংহের রুটে সিএনজি ভাড়া ১৫০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছে


৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৫:১১

আপডেট:
৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৯:৫৭

শেরপুরের সিএনজি চালকরা রৌমারী-রাজিবপুর উপজেলা ও অন্যান্য স্থানের যাত্রীদের কাছ থেকে সিন্ডিকেট করে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় ও যাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে। ঈদের পাঁচ দিন পর কর্মস্থলে যাওয়ার পথে শেরপুর থেকে ময়মনসিংহের রুটে সিএনজি ভাড়া ১৫০ টাকা বেড়ে ৩০০ টাকা হয়েছে।

একটি দালাল চক্র অটোরিকশা স্ট্যান্ডে অতিরিক্ত ভাড়ার আদায়ের প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে অপমান-অপদস্ত করছে।

যাত্রীরা ভাড়া বেশি দিয়েও সেকথা বলতে পারছেন না ভয়ে। কারণ এই চিত্র শুধু শেরপুর সদর থানার সামনের ময়মনসিংহগামী স্ট্যান্ডেই নয়; জেলার সব সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ডে একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়। যাত্রীদের কাছ থেকে

জানা যায়, স্বজনের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটিয়ে কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন জেলার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। শেরপুরের ওপর দিয়ে কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজীবপুর, চিলমারী ও জামালপুরের বকশীগঞ্জ ও সানন্দাবাড়ির হাজারো মানুষ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করতেছেন নিয়মিত।

ঘরমুখী যাত্রীদের ঈদের আগে এবং পরে প্রশাসন ভাড়া নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায় এবং জরিমানাসহ শাস্তিও দেয়। এতে ভাড়া কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকলেও। কিন্তু গত শুক্রবার থেকে কর্মস্থলমুখী যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার সিন্ডিকেটের চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় শুরু করে।

এ খবর পেয়ে অভিযান চলালেও এক স্ট্যান্ডের খবর অন্য স্ট্যান্ডে ফোনে জানিয়ে দেয় চক্রের সদস্যরা। ফলে যে স্ট্যান্ডে আধাঘণ্টা বা ১ ঘণ্টার অভিযান চলে সেখানে ভাড়া কিছুক্ষণ সহনীয় থাকলেও অপরপ্রান্তে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় চলতে থাকে। আবার তদারকি দলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চলে যাওয়ার পর আবার শুরু হয় অতিরিক্ত ভাড়া আদায়।

শেরপুর থেকে ময়মনসিংহের দূরত্ব ৬৯ কিলোমিটার। এখানে ঈদের আগে ভাড়া ছিল ১৫০ টাকা। গত শুক্রবার থেকে একই দূরত্বে ভাড়া ৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

স্ট্যান্ডগুলোতে যাত্রীর চাপ বেশি থাকার সুযোগ নিয়ে স্বল্প দূরত্বের যাত্রীর কাছ থেকেও হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিন চাকার সিএনজি অটোরিকশা এই যানবাহন করে কর্মস্থলে ফিরছেন যাত্রীরা।

শনিবার সকালে পোশাক শ্রমিক মিনা বেগমের বলেন। তাঁর সঙ্গে আরও দুই সহকর্মী গাজীপুর যাবেন। রোববার (আজ) সকালে তাদের কর্মস্থলে হাজির হতে হবে। ঈদের ছুটিতে সিএনজি চালিত অটোরিকশা দিয়ে ময়মনসিংহ থেকে শেরপুরে আসেন। বাসের টিকিট না পেয়ে ঈদের পরও একইভাবে ময়মনসিংহে যাচ্ছেন।

সেখান থেকে অন্য কোনো যানবাহনে বাসায় ও কর্মস্থলে যাবেন। মিনা বেগম বলেন, তাদের কাছ থেকে ৩০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হবে। আসার সময় ১৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে এসেছেন। ঈদের পাঁচ দিন পরও ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি।

আকমল হোসেন চাকরি করেন একটি বেসরকারি ফার্মে। তিনি যাবেন ভালুকায়। তাঁর ভাষ্য, আসার সময় ময়মনসিংহ থেকে শেরপুর পর্যন্ত ভাড়া নিয়েছে ১৫০ টাকা। ফেরার সময় ৩০০ টাকা চাচ্ছে।

কেন ৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তাঁকে এক চালক ও কিছু লোক গালাগালি করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার হয়। লজ্জায় কাউকে বলতে পারছেন না।

অটোরিকশা চালক আশরাফ আলীর দাবি, কয়েকদিন ধরে লাইন দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকে গ্যাস নিতে হচ্ছে। সেখানে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। সেখানে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়। আবার গ্যাসের থেকে হাওয়া বেশি দেয়। তাই ভাড়া বেশি না নিলে তাদের কিছুই থাকে না।

শেরপুর শহরের খোয়ারপাড় মোড়ে কথা হয় রৌমারী থেকে আসা যাত্রী আবুল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, 'আগে রৌমারী থেকে ২৫০ টাকায় শেরপুর আসতাম। আজ (শনিবার) ৩০০ টাকা ভাড়া নিয়েছে।' একই এলাকা থেকে শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়িগামী অটোরিকশার চালকরা ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া বেশি নিচ্ছেন বলে অভিযোগ যাত্রীদের। একই অবস্থা শহরের থানা মোড়ে শেরপুর জামালপুর ও নকলা, চন্দ্রকোনা স্ট্যান্ড থেকে জানা যায়।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের ভাষ্য- বাসস্ট্যান্ড, সিএনজি চালিত অটোরিকশা স্ট্যান্ড নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে। বাড়তি ভাড়া নেওয়ায় জরিমানা করা হচ্ছে সিএনজি অটোরিকশা চালকদের। চেষ্টার কোনো ত্রুটি রাখছেন না প্রসাশনের আইনি টিমের।