ঢাকা মঙ্গলবার, ৩রা জুন ২০২৫, ২০শে জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২


রেকর্ডের ম্যাচে পাঁচ গোলেই ছোঁয়া রেখে মায়ামির মেসিময় জয়


১ জুন ২০২৫ ১৩:৩৩

আপডেট:
১ জুন ২০২৫ ১৪:০৪

গোলের উল্লাস লিওনেল মেসির। ছবি: রয়টার্স

লিওনেল মেসি ছন্দে থাকলে কতটা ভয়ঙ্কর সুন্দর, টের পেল কলম্বাস ক্রু। নিজে গোল করলেন, গড়লেন রেকর্ড। সতীর্থদের দিয়ে করালেন একের পর এক। আর্জেন্টাইন জাদুকরের মোহনীয় পারফম্যান্সে বিশাল জয় দিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের মহড়া সেরে নিল ইন্টার মায়ামি।

মেজর লিগ সকারের ম্যাচে ইন্টার মায়ামির কাছে ৫-১ গোলে বিধ্বস্ত হলো কলম্বাস ক্রু। ম্যাচের প্রথম ভাগেই মেসি নিজে গোল করলেন দুটি। মেজর লিগ সকারের নিয়মিত মৌসুমে ৩০ গোল করে তিনি ছাড়িয়ে গেলেন মায়ামির হয়ে গন্সালো হিগুয়াইনের রেকর্ড। ম্যাচজুড়ে দারুণ খেলে বানিয়ে দিলেন দলের বাকি তিন গোলও।

লিগ টানা চার ম্যাচে জিততে না পারার হতাশা পেরিয়ে আগের ম্যাচে সিএফ মন্ট্রিয়লের বিপক্ষে ৪-২ গোলে জিতেছিল মায়ামি। সেদিনও দারুণ খেলেছিলেন মেসি। তবে কলম্বাস ক্রুর বিপক্ষে এই ম্যাচে মেসি ও তার দল ফিরল যেন সত্যিকারের চেহারায়। ক্লাব বিশ্বকাপের আগে এমন জয়ে প্রতিপক্ষ দলগুলিকেও তারা দিয়ে রাখল বার্তা।

বাংলাদেশ সময় রোববার সকালে এই ম্যাচে বল নিয়ন্ত্রণে রাখার লড়াইয়ে দুই দল ছিল কাছাকাছি (মায়ামি ৫১ শতাংশ, ক্রু ৪৯)। গোলে শট নেওয়াতেও খুব বেশি পিছিয়ে ছিল না ক্রু। কিন্তু কার্যকারিতায় ফারাক ছিল আকাশপাতাল। গোলে ১৪টি শট নিয়ে ৭টি লক্ষ্যে রাখে মায়ামি, জায়ের দেখা পায় ৫টিতে। ক্রু গোলে শট নেয় ১২টি, লক্ষ্যে ছিল স্রেফ ১টিই। ঘরের মাঠে ম্যাচের ত্রয়োদশ মিনিটেই জাদুর ঝলক দেখান মেসি। নিজেদের অর্ধে মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে আচমকাই উঁচু করে দূরপাল্লার নিখুঁত পাস দেন তিনি তাদেও আইয়েন্দেকে। ক্রুর ডিফেন্ডারদের হতভম্ব করে বক্সের ভেতর বল না ধরেই ডান পায়ের নিখুঁত শটে বল জালে জড়ান আর্জেন্টাইন উইঙ্গার।

দেড় মিনিটপর মেসির নিজের গোল করার পালা। যদিও সেটি প্রতিপক্ষ গোলকিপারের উপহার। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে একটু বেশি সময় নিয়ে গড়বড় করে বসেন ক্রুর গোলকিপার নিকোলাস হ্যাগেন। পরে তড়িঘড়ি করে পাস দিয়ে বসেন তিনি বক্মের মুখে থাকা মেসিকে। সুযোগ বুঝে বুক দিয়ে বল নামিয়ে উঁচু করে গোলের দিকে ভাসিয়ে দেন মেসি। গোলকিপার হ্যাগেন লাফিয়ে বল হাত ছোঁয়ালেও ঠেকাতে পারেননি। তার হাত থেকে এক ড্রপে বল চলে যায় জালে।

মিনিট দশেক পর নিজেদের অর্ধ থেকেই উঁচু করে দারুণ এক বল বাড়ান সের্হিও বুসকেতস। ক্রুর অফসাইড ফাঁদ পেরিয়ে বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে যান মেসি। আগুয়ান গোলকিপারের ওপর দিয়ে আলতো চিপ করে মায়ামি অধিনায়ক করেন নিজের দ্বিতীয় গোল। ২৪ মিনিটের মধ্যে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় মায়ামি। দুই মিনিট পর মেসির আরেকটু দুর্দান্ত পাস থেকে গোল করার সুযোগ হারান লুইস সুয়ারেস। প্রথমার্ধের শেষ দিকে সুয়ারেসের শট কোনোরকমে বাইরে পাঠিয়ে দেন ক্রুর গোলকিপার হ্যাগেন।

৫৮তম মিনিটে একটি গোল শোধ করে ম্যাচে উত্তেজনা ফেরানোর আভাস দেয় ক্রু। তবে ম্যাচকে তো নিজের করে নিতে চেয়েছেন মেসি! ৬৪তম মিনিটে দারুণভাবে ওয়ান-টু খেলে বক্সে ঢুকে যান তিনি। পাস দেন তেলাস্কো সেগোভিয়াকে। ভেনেজুয়েরার তারকা নিজে গোলে শট নিতে পারতেন, কিন্তু আলতো টোকায় বাড়িয়ে দেন ফাঁকায় থাকা সুয়ারেসকে। অভিজ্ঞ ফরোয়ার্ড ভুল করেননি সুযোগ কাজে লাগাতে। নান্দনিক এক দলীয় গোল।

৮০তম মিনিটে সুয়ারেসের বদলে মাঠে নামে ফাফ পিকুঁ। ৮ মিনিট পর নিজেদের অর্ধ থেকে আবার দারুণ এক পাস দেন মেসি। প্রতিপক্ষের অনেক ফুটবলারদের মাঝ দিয়ে বেরিয়ে বল খুঁজে নেয় পিকুঁকে। অভিজ্ঞ উইঙ্গার দ্রুতগতিতে বল নিয়ে ছুটে বক্সের বাইরে থেকেই আগুয়ান গোলকিপারের পাশ দিয়ে বল পাঠান জালে। টানা দুই জয়ে ১৬ ম্যাচে ২৯ পয়েন্ট নিয়ে মেজর লিগ সকারের ইস্টার্ন কনফারেন্সের তিনে উঠে এলো মায়ামি। ১৭ ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ফিলাডেলফিয়া ইউনিয়নের, ১৭ ম্যাচ ৩০ পয়েন্ট সিনসিনাটি এফসির।