বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির (বিআরপি) বিরুদ্ধে ভুয়া কমিটির অপপ্রচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

সম্প্রতি বহিষ্কৃত দুই নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো এবং বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির (বিআরপি) নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজির অভিযোগ এনেছে দলটির বর্তমান কমিটি ও দলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সোহেল রানা ও মহাসচিব তহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে এই অভিযোগের কথা জানান।
বিআরপি'র শীর্ষ নেতাদের অভিযোগ, সম্প্রতি কিছু অনলাইন পোর্টালে নাজমুল করিমকে সভাপতি এবং নাজমুল আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি নতুন কমিটি গঠনের খবর প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরকে "ভিত্তিহীন, বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক" বলে আখ্যায়িত করেছেন সোহেল রানা ও তহিদুল ইসলাম। তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন যে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বর্তমানে একটি বৈধ কেন্দ্রীয় কমিটি বিদ্যমান, যার নেতৃত্বে তারাই রয়েছেন। নতুন কোনো কমিটি গঠিত হয়নি এবং এ ধরনের কোনো কার্যক্রম দলের অনুমোদিত নয়। এই ধরনের মিথ্যা সংবাদ ছড়ানোকে দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন বিআরপি নেতারা।
মহাসচিব তহিদুল ইসলাম বলেন, “দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে গত ৩১ মে আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল করিমকে বহিষ্কার করা হয়। এরপরও তিনি নিজেকে দলের সভাপতি দাবি করে বিআরপি’র নাম, লোগো ও প্যাড অবৈধভাবে ব্যবহার করছেন।”
এই বিষয়ে ঢাকার রমনা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং নাজমুল করিমের বিরুদ্ধে আদালতেও মামলা করেছে বিআরপি। দলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে বহিষ্কৃত নেতারা অবৈধ ফায়দা হাসিল ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এসব কর্মকাণ্ড করছেন।
তারা মনে করছেন, বিআরপি বর্তমানে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেছে এবং এই ধরনের মিথ্যা সংবাদ দলটির নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার একটি কৌশল হতে পারে।
সম্প্রতি দেশকাল অনলাইন পোর্টালে প্রকাশিত একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে, ইসিতে নিবন্ধনের জন্য আবেদনকারী বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টির (বিআরপি) দেওয়া সেগুনবাগিচার ঠিকানায় গিয়ে দলের কোনো কার্যালয়ের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উল্লিখিত ঠিকানায় একটি বেসরকারি সংবাদ সংস্থার কার্যালয় রয়েছে এবং সেখানে বিআরপি'র কোনো ব্যানার বা সাইনবোর্ড দেখা যায়নি। এই প্রতিবেদনের জবাবে বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি) একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছে, যেখানে তারা উল্লিখিত তথ্যকে 'সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা, বানোয়াট ও কল্পনাপ্রসূত' বলে অভিহিত করেছে। বিআরপি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়েছে যে, কোনো ধরনের সরেজমিন তদন্ত বা যথাযথ যাচাই-বাছাই ছাড়াই এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য পরিবেশন শুধু সাংবাদিকতার নীতিমালার পরিপন্থীই নয়, বরং এটি তাদের দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার একটি 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপচেষ্টা'।
এদিকে বিআরপি’র মহাসচিব তহিদুল ইসলামকে দেশকাল অনলাইন পোর্টালের সেই নিউজ লিংক পাঠিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক কবির আলমগীর চাঁদা দাবি করেন এমন অভিযোগ এনেছেন তিনি। তহিদুল ইসলাম দাবি করেন যে কবির আলমগীর তাকে একটি অনলাইন নিউজের লিংক পাঠিয়ে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। অভিযোগ অনুযায়ী, নির্ধারিত টাকা দিলে সংবাদটি সরিয়ে ফেলার প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কবির আলমগীর ও তার সহযোগীরা একাধিক অনলাইন পোর্টালে বিআরপি’র বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মানহানিকর সংবাদ ছড়াতে শুরু করেন।
দলীয় শীর্ষ নেতারা বিআরপি’র সকল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের এসব অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেন, “যারা বিআরপি’র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তাদের বিরুদ্ধে দল খুব শিগগিরই কঠোর সাংগঠনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”