সরকারে এসে অবরুদ্ধ বোধ করছি: আইন উপদেষ্টা

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নীতি-প্রণয়ন ও আইনি কাঠামোর সংস্কারের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন আইন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডের সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও অভিযোগ নিষ্পত্তির আইনি কাঠামোর পর্যালোচনা’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
সেমিনারে আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকারে এসে নিজেকে সবচেয়ে অসহায় মনে হচ্ছে। জীবনে কখনো এতটা অবরুদ্ধ বোধ করিনি। কারণ সরকারে আসার কারণে আমাকে নিয়ে অনেক মিথ্যাচার হচ্ছে, অথচ আমি কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে পারি না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘অনেক অন্যায় তদবির আমার কাছে আসে। আমি যখন তাতে সাড়া দিই না, তখন আমাকে গালাগালি করা হয়, ভারতের দালাল বানানো হয়।’
সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চলমান মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে কিছু মিথ্যা মামলা হচ্ছে, তবে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা সেই তুলনায় অস্বাভাবিক নয়। কারা জামিন পাবে, এটা আদালতের বিষয়, আইন মন্ত্রণালয়ের নয়। বিচারকরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেন।’
সাংবাদিক দম্পতি শাকিল ও ফারজানা রূপার জামিন না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা জামিন বিষয়ে আদালতকে কোনো নির্দেশনা দিই না। বিচারকই ঠিক করেন কোন ভিত্তিতে জামিন দেয়া হবে বা হবে না।’
গণমাধ্যমে দলাদলি ও গ্রুপিং নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আসিফ নজরুল বলেন, ‘গণমাধ্যমের কেউ এক নয়। সাংবাদিকদের এক হতে হবে, না হলে গণমাধ্যম কখনো স্বাধীন হবে না।’
তিনি জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে দায়ের করা প্রায় সব মামলাই প্রত্যাহার করা হয়েছে। কিন্তু মিথ্যা মামলার প্রবণতা কিছু মানুষ, আইনজীবী ও রাজনীতিকের মাধ্যমে এখনো বজায় আছে।
সেমিনারে উপস্থিত জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ বলেন, ‘গণমাধ্যমে মালিকানা ও ব্যবস্থাপনাকে আলাদা করতে হবে। তা না হলে স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়।’
‘দ্য ফিন্যান্সিয়াল পোস্ট’-এর প্রধান সম্পাদক এম এ আজিজ বলেন, ‘সাংবাদিকরাও এখন ট্রমাটাইজ। মালিক ও বাইরের চাপের কারণে তারা প্রতিনিয়ত মানসিক চাপের মধ্যে কাজ করছেন।’