খালেদা জিয়াকে যে পথে অভ্যর্থনা, যানজট এড়ানোর বিকল্প পথ কোনগুলো

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন। এ উপলক্ষে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। নির্দেশনায় জনসাধারণকে রাস্তায় না দাঁড়িয়ে ফুটপাতে অবস্থান করার অনুরোধসহ ১০টি নির্দেশনা দিয়েছে পুলিশ।
সোমবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তিতে এই বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিএনপির পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, কাতারের আমিরের পাঠানো রয়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে মঙ্গলবার সকালে (সাড়ে ১০টায়) বেগম জিয়া দেশে এসে নামবেন। সকালে এসএসসি পরীক্ষার জন্য বের হবেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় দলের নেতা-কর্মীদের বিমানবন্দর থেকে গুলশান পর্যন্ত ফুটপাত থেকে সড়কে না নামার আমি অনুরোধ করছি।
ডিএমপির গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬ মে সকাল সাড়ে ১০টায় বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে প্রত্যাবর্তন করে ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসভবনে আসবেন। এ উপলক্ষে ঢাকা এয়ারপোর্ট থেকে গুলশানের বাসভবন পর্যন্ত রাস্তায় তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য অতিরিক্ত জনসমাগম হওয়ার সম্ভাবনা থাকায় সুষ্ঠু ট্রাফিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ১০টি বিষয় মেনে চলার বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পুলিশের নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—
(১) আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জনসাধারণকে গুলশান/বনানী থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান না করে ফুটপাতে অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হলো। সংশ্লিষ্ট দলের নেতাদের আগত জনসাধারণকে রাস্তা থেকে সরিয়ে ফুটপাতে অবস্থান করানোর জন্য প্রয়োজনীয় স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন করে সর্বাত্মক সহযোগিতার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(২) আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গুলশান/বনানী থেকে উত্তরা পর্যন্ত সড়ক যথাসম্ভব পরিহার করে বিকল্প রাস্তা হিসেবে নিম্নোক্ত রাস্তা ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো:
(ক) আব্দুল্লাহপুর কামারপাড়া ধউর ব্রিজ-পঞ্চবটী-মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে গাবতলী হয়ে চলাচল করা।
(খ) ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করা।
(গ) উত্তরা ও মিরপুরে বসবাসকারী সম্মানিত নাগরিকেরা এয়ারপোর্ট সড়ক ব্যবহার না করে বিকল্প হিসেবে হাউস বিল্ডিং-জমজম টাওয়ার-১২ নম্বর সেক্টর খালপাড়-মেট্রোরেল উত্তরা উত্তর স্টেশন-উত্তরা সেন্টার স্টেশন-মিরপুর ডিওএইচএস হয়ে চলাচল এবং উত্তরা সেন্টার স্টেশন হতে ১৮ নম্বর সেক্টর-পঞ্চবটী হয়ে মিরপুর বেড়িবাঁধ দিয়ে চলাচল করতে পারেন।
(ঘ) গুলশান, বাড্ডা ও প্রগতি সরণি এলাকার যাত্রীসাধারণ কাকলী, গুলশান-২, কামাল আতাতুর্ক সড়কের পরিবর্তে গুলশান-১ /পুলিশ প্লাজা-আমতলী-মহাখালী হয়ে মহাখালী বাস টার্মিনালসংলগ্ন র্যাম্প ব্যবহার করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে হয়ে এয়ারপোর্ট/উত্তরা যেতে পারেন।
(ঙ) মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইলগামী যানবাহনসমূহ মিরপুর-গাবতলী রোড হয়ে চলাচল করতে পারেন।
(চ) এয়ারপোর্ট/ ৩০০ ফিট রাস্তা থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে চলাচলকারী যানবাহনসমূহ বনানী/কাকলী র্যাম্পের পরিবর্তে মহাখালী র্যাম্প/এফডিসি র্যাম্প ব্যবহার করতে পারেন।
(৩) ডিএমপির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা সেনানিবাস কর্তৃপক্ষ ঢাকা সেনানিবাসের রাস্তা (জিয়া কলোনি/জাহাঙ্গীর গেট/সৈনিক ক্লাব/স্টাফ রোড) সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত শুধু হালকা যানবাহন গমনাগমনের অনুমতি দিয়েছে। সুতরাং সেনানিবাসের রাস্তা ব্যবহার করতে পারেন।
(৪) ডিএমপির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল নির্ধারিত টোল পরিশোধপূর্বক সর্বোচ্চ ৪০ কিলোমিটার /ঘণ্টা গতিসীমা মেনে ও এক্সপ্রেসওয়ের বাম পাশের সেফ লেন ব্যবহার করে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ওভারস্পিড ও লেন পরিবর্তন করলে আইন প্রয়োগের জন্য পর্যাপ্ত ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
(৫) যাত্রীসাধারণকে বিকল্প হিসেবে ঢাকা-জয়দেবপুর গমনাগমনকারী ট্রেনসমূহ ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো। ডিএমপির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সম্মানিত যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ রেলওয়ের সব আন্তনগর ট্রেন আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত টঙ্গী, এয়ারপোর্ট ও তেজগাঁও স্টেশনে দুই মিনিটের জন্য থেমে যাত্রী বহনের ব্যবস্থা করবে। এ ছাড়া বাংলাদেশ রেলওয়ে আগামীকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কমলাপুর-টঙ্গী রুটে অতিরিক্ত একটি শাটল ট্রেন পরিচালনা করবে।
(৬) সম্মানিত হজযাত্রীসহ বিদেশগামী যাত্রীসাধারণকে এয়ারপোর্টে গমানগমনের ক্ষেত্রে এবং ওই এলাকায় এসএসসি পরীক্ষার্থীদের যথেষ্ট সময় নিয়ে বাসা হতে বের হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৭) মিরপুর ও উত্তরাবাসীকে বিকল্প হিসেবে মেট্রোরেল ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৮) সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিদের কোনো ব্যাগ, লাঠি ইত্যাদি বহন না করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
(৯) অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিরা কোনো যানবাহন নিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহরে যুক্ত হতে পারবেন না।
(১০) অভ্যর্থনাকারী ব্যক্তিরা মোটরসাইকেল নিয়ে কোনোক্রমেই গুলশান/বনানী থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তায় অবস্থান করতে পারবেন না বা মোটরসাইকেলযোগে জনতার মধ্য দিয়ে চলতে পারবেন না। তবে এ রাস্তা দিয়ে (জনসমাগম না হলে) সাধারণ যানের সঙ্গে মোটরসাইকেল চলতে পারবে।
এসব বিষয়ে সবার সহযোগিতা চেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।