ভোটে উষ্ণ শীতের ঢাকা

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণসংযোগ শুরু হয়েছে ১০ জানুয়ারি। প্রচারের শুরু থেকেই উত্তাপ ছড়াচ্ছে। প্রতীক নিয়ে প্রচারের তৃতীয় দিন গতকাল রবিবার তিন মেয়রপ্রার্থী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন।
বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থীদের অনেকেই পুলিশি হয়রানি ও প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ করেছেন।
গত দুদিনে তীব্র শীতে সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রতিনিয়ত বাড়ছে শীতের তীব্রতা। কিন্তু একেবারেই ভিন্ন নির্বাচনী পরিবেশের চিত্র। শীতের হিমেল হাওয়ার মধ্যেও নির্বাচনী উষ্ণতা টের পাওয়া যাচ্ছে।
এর প্রতিফলন দেখা গেছে গতকাল মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, গোপীবাগ ও ওয়ারীতে। সকালে উত্তর সিটিতে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগের পর দুপুরে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগ মেয়রপ্রার্থী ফজলে নূর তাপস এবং রাতে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনও একই অভিযোগ করেন।
তাবিথ আউয়াল বলেছেন, দুপুরে মিরপুর-১ নম্বরের উত্তর বিশিলে শাহআলী মাজারের সামনে পুলিশের সামনেই তার প্রচার মিছিলে হামলা করে ‘ক্ষমতাসীন দলের’ নেতাকর্মীরা। এতে একজন আহতও হন।
অন্যদিকে দক্ষিণে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস অভিযোগ করেন, আগের দিন সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশন রোডে তার গণসংযোগে ‘হামলা করেছে’ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মীরা।
রাতে ইশরাক তার গোপীবাগের বাড়িতে
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, তার প্রচারে হামলা হয়েছে, আটক করা হয়েছে অন্তত ৯ জনকে।
গত শুক্রবার নির্বাচনী প্রচার শুরু হওয়ার প্রথম দুদিনের পরিবেশ বেশ শান্তই ছিল। গতকাল সকালে সেই শান্ত পরিবেশ হঠাৎ অশান্ত হয়ে ওঠে। দিনশেষে নির্বাচনী আবহাওয়া বৈরী ছিল বলে মনে করছেন নেতাকর্মীরা।
৩৮ নং ওয়ার্ডের ৩ নং যোগীনগর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী মেহেরুন নেসার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় শ্রমিক দলের ওয়ার্ড সভাপতি আবদুুস সালাম গুরুতর আহত হন বলে বিএনপির দাবি।
মিরপুরে তাবিথের প্রচারে হামলার অভিযোগ : তাবিথ আউয়াল সকালে মিরপুরে শাহআলীর মাজার জিয়ারতের পর কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসংযোগ শুরু করেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে নৌকাপ্রার্থীর একটি মিছিল এলে পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
একপর্যায়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে আল আমিন নামে এক বিএনপিকর্মী আহত হন। মাজারের সামনেই দুপক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য।
ওই হামলার জন্য আওয়ামী লীগকর্মীদের দায়ী করে তাবিথ বলেন, শাহআলী মাজারের সামনে প্রচারের সময় জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে হামলা চালানো হয়।
পুলিশের সামনেই এ হামলা হয়।
এ ঘটনার জন্য তাবিথ আউয়াল আওয়ামী লীগকে দায়ী করে উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।
তাবিথ বলেন, প্রচারে বাধা আসছে। যত বাধা-বিপত্তি আসুক আমরা পিছু হটব না।
আমাদের প্রচারে সাধারণ জনগণের সমর্থন আছে। আমরা তাদের নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাবই।
নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমাদের আশঙ্কার (হামলা ও বাধা) কথা দিন দিন প্রমাণিত হচ্ছে। এ সময় তিনি নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে নির্বিঘেœ প্রচারের সুযোগ তৈরি করে দেওয়ার দাবি জানান।
এর পর তাবিথ আউয়াল উত্তর বিশিল, গুদারাঘাট, চিড়িয়াখানা রোড, ১ নং মিরপুর ঈদগাঁ মাঠ, ডি ব্লক মুক্তিযোদ্ধা মার্কেট, ১২ নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বিশিল, হাজী বশিরউদ্দিন স্কুল রোড, হাবুলের পুকুরপাড়, ১৩ নং ওয়ার্ডের উত্তর পীরেরবাগ, ৬০ ফিট, মধ্য পীরেরবাগ, মোল্লাপাড়া, মনিপুরি স্কুল রোড, জোনাকি রোড, বড়বাগ হয়ে মিরপুর থানা, ১০ নং ওয়ার্ডের মিরপুর মাজার থেকে দ্বিতীয় কলোনি, তৃতীয় কলোনি হয়ে দারুস সালাম ফুরফুরা শরীফে গণসংযোগ করেন। তার সঙ্গে বিএনপি সমর্থিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও দলের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিএনপি মেয়রপ্রার্থী বলেন, মিরপুর এলাকার রাস্তাঘাটের অবস্থা খুবই খারাপ। পুরো শহরে বায়ুদূষণে ঢেকে গেছে। যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখার কারণে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে।
ফলে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে, অনেক প্রাণহানিও হয়েছে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছিÑ আগামী দিনে জনকল্যাণ ও জনগণের মেয়র হিসেবে কাজ করতে চেষ্টা করব। আমি নগরবাসীর সব সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখব।
নিজ কর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ
তাপসেরও : দক্ষিণে আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী ফজলে নূর তাপস শান্তিনগর কাঁচাবাজার থেকে তৃতীয় দিনের নির্বাচনী প্রচারাভিযান শুরুর আগে সাংবাদিকদের সামনে হামলার অভিযোগ তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, শনিবার আরকে মিশন রোডে নির্বাচনী প্রচারের একপর্যায়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইশরাক হোসেনের বাসাতেও আমি গিয়েছি। সেখানে সবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, ভোট চেয়েছি। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা সেখান থেকে চলে আসার পর সন্ধ্যার দিকে তারা অতর্কিতে আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ গণসংযোগে যারা ছিল, তাদের ওপর আক্রমণ করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা ফজলুল হক মনির ছেলে তাপস বলেন, আমরা চাই সম্প্রীতির রাজনীতি, পরিবর্তনের রাজনীতি।
আমরা এ রাজনীতির সূচনা করতে চাই। আমরা আশা করব, সবাই সেই সূচনায় অংশগ্রহণ করবে। আমরা একটা সুন্দর, সম্প্রীতির রাজনীতি ঢাকাবাসীকে উপহার দিব। তিনি বলেন, যে পরিকল্পনা আমরা নিয়েছি, আমাদের প্রাণের ঢাকা, ভালোবাসার ঢাকাকে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐতিহ্যের ঢাকা, সুন্দর ঢাকা, সচল ঢাকা, সুশাসিত ঢাকা এবং সর্বোপরি উন্নত ঢাকা গড়ে তোলার জন্য ঢাকাবাসী সেটা সাদরে গ্রহণ করেছে। স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া পাচ্ছি।
শান্তিনগর এলাকার ১৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরপ্রার্থী পল্টন থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক আবুল (ঘুড়ি) এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরপ্রার্থী রোকসানা ইসলাম চামেলীকে (আনারস) পরিচয় করিয়ে দেন তাপস।
প্রচারের সময় রাস্তায় কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা যেন সৃষ্টি না হয়, সেদিকে দৃষ্টি রাখতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগের প্রার্থী।
হামলা-গ্রেপ্তারের অভিযোগ ইশরাকের : গতকাল রবিবার পুরনো ঢাকার দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণ থেকে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন দক্ষিণের বিএনপির মেয়রপ্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন। স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ও মির্জা আব্বাসকে দুপাশে রেখে তিনি গণসংযোগ শুরু করেন।
এদিন আদালত, ইংলিশ রোড, বংশাল, তাঁতীবাজার হয়ে নয়াবাজারের মোড়ে এসে এ প্রচার শেষ হয়। ইশরাক যখন মিছিলের অগ্রভাগে সিনিয়র নেতাদের নিয়ে লিফলেট দিচ্ছিলেন তখন সড়কের দুধারে নারী-পুরুষদের দাঁড়িয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়।
ইশরাক বলেন, পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যে আমি ঢাকাকে বাসযোগ্য নগরীতে ঢেলে সাজাতে চাই; যানজট, দূষণমুক্ত আধুনিক ঢাকা বিনির্মাণে কাজ করতে চাই।
বিগত ১৩ বছরে মেয়ররা ঢাকাকে বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত করেছেন বলেও অভিযোগ করেন ইশরাক। গতকাল সন্ধ্যায় গোপীবাগের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলনে ইশরাক হোসেন বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্য, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একটি বিশেষ মহল থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ ক্রমেই বিনষ্ট করা হচ্ছে।
তার অভিযোগ, সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি থানার বিভিন্ন ওয়ার্ডে আমার নির্বাচনী প্রচারকালে পুলিশ আমাদের কয়েকজন কর্মীকে হয়রানি করতে থাকে। সে সময় আমি সরাসরি হস্তক্ষেপ করায় পুলিশ নিবৃত্ত হয়।
কিন্তু গণসংযোগ চালিয়ে আমি সামনে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে ৪ কর্মীকে আটক করে তারা। এ খবর শোনামাত্র আমি বংশাল থানায় যাওয়ার উদ্যোগ নেই। কিন্তু তখন পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কাউকে আটক করা হয়নি।
তিনি আরও জানান, হাজারীবাগ পার্কের সামনে থেকে আমার প্রচারকাজ চালানোর সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগকর্মীরা রিকশার গতিরোধ করে দুই কর্মীকে মারধর করে মাইক ও মাইকের সরঞ্জাম রেখে দেয় এবং পরে থানাপুলিশে দেওয়ার হুমকি দেয়।
তিনি আরও বলেন, প্রায় একই সময় ৩৮ নং ওয়ার্ডের ৩ নং যোগীনগর রোডে সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থী মেহেরুন নেসার নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এ হামলায় শ্রমিক দলের ওয়ার্ড সভাপতি আবদুস সালাম গুরুতর আহত হন।
৬২ নং ওয়ার্ডের নয়ানগর এলাকার যাত্রাবাড়ী থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা ইয়ামিন, ইয়াছিন ও ইমনকে ধানের শীষের পক্ষে পোস্টার লাগানোর কারণে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে মারধর করে।
কবি নজরুল কলেজ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি এহসান মামদুদ, নিখিল চন্দ্র শ্রাবণ ও সিরাজ ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শেষে গোপীবাগ আসার পথে যোগীনগর এলাকায় স্থানীয় যুবলীগকর্মীরা হামলা করে। এতে গুরুতর আহত হন তারা।
তিনি আরও বলেন, বেলা ১১টায় নূরফাতে আলী লেনে বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ ও লাটিম মার্কার প্রচারকালে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আওয়ামী লীগপ্রার্থীর নেতৃত্বে পুলিশসহ তার নেতাকর্মীদের নিয়ে সাহিদা মোর্শেদের প্রচার বাধাগ্রস্ত করে এবং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির চশমা নিয়ে তাকে লাঞ্ছিত করে। আওয়ামী লীগকর্মী পাভেল ও রনি ৪১ নং ওয়ার্ডের ২৩ নং ওয়্যার স্ট্রিটের সামনে থেকে ধানের শীষের পক্ষে মাইকিং করার সময় মাইক ভাঙচুর এবং জুয়েলকে মারধর করে আওয়ামী লীগ অফিসে নিয়ে যায়।
ঢাকাকে সিঙ্গাপুর-দুবাই গড়ার ইচ্ছা আতিকের : ঢাকাকে সিঙ্গাপুর-দুবাইয়ের মতো গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী আতিকুল ইসলাম।
গতকাল রবিবার সকালে উত্তরায় রাজলক্ষ্মী এলাকায় নির্বাচনী গণসংযোগ করেন আতিকুল ইসলাম। সেখানে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন। তিনি বলেন, উন্নয়ন চলছে, চলবে। এ শহরের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে এবার গন্তব্যে নেওয়ার পালা। ভোটারদের উদ্দেশে আতিকুল ইসলাম বলেন, সবাই মিলে সবার ঢাকা; সুস্থ, সচল ও আধুনিক ঢাকা গড়তে চাই। ৩০ জানুয়ারি উন্নয়নের মার্কা নৌকায় ভোট দিন।
সকালে উত্তরার রাজলক্ষ্মী এলাকায় লিফলেট বিতরণের মাধ্যমে গণসংযোগ শুরু করেন আতিকুল ইসলাম। এ সময় রাস্তায় চলা সাধারণ পথচারী থেকে শুরু করে আশপাশের দোকানদারদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তিনি ৩০ জানুয়ারি নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। পরে আতিকুল ইসলাম উত্তরা রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্সের সামনে নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে প্রথম পর্বের বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাতে অংশ নেন।
এর পর আতিকুল ইসলাম কসাইবাড়ি, রেলগেট, কাচপুর, উত্তরখান, দক্ষিণখান, ময়নারটেক হয়ে আব্দুল্লাহপুর তুরাগে গণসংযোগ করেন। বিকালে কামারপাড়া স্কুল, নয়নগর মাদ্রাসা হয়ে রানাভোলা, বাউনিয়ায় গণসংযোগ করেন। সন্ধ্যায় ঢাকা মেকানিক অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আজ আতিকুল ইসলাম সকালে খিলগাঁও তালতলা মার্কেট থেকে গণসংযোগ শুরু করবেন। এর পর মাটির মসজিদ, আবুল হোটেল, রামপুরা হয়ে বাড্ডায় গণসংযোগ করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেম আমাদের সময়কে বলেন, হামলার বিষয়ে আমাকে কেউ লিখিত জানায়নি। আমি জানি না। কারও কোনো চিঠি বা অভিযোগ হাতে পাইনি। লিখিত জানানো হলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, হামলার কোনো ঘটনা সম্পর্কে আমার জানা নেই। কেউ কিছু জানায়নি।
নিরাপত্তা চেয়ে ইসিতে তাবিথের চিঠি : গতকালের হামলার ঘটনায় তাবিথ আউয়াল আওয়ামী লীগকে দায়ী করে উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে নিরাপত্তা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন।
রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লেখা চিঠিতে তাবিথ উল্লেখ করেন, ‘দারুসসালাম থানা এলাকায় গণসংযোগকালে প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লোকজন আমাকে ও আমার সঙ্গের লোকজনকে লাঠিসোটা নিয়ে অতর্কিত আক্রমণ এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
এতে আমার বেশ কয়েকজন কর্মী গুরুতর আহত হন। এ ধরনের কার্যকলাপ সিটি করপোরেশন (নির্বাচন আচরণ) বিধিমালা ২০১৬-এর বিধানের পরিপন্থী।’
এ বিষয়ে তদন্ত দাবি করে চিঠিতে আরও উল্লেখ করেন, ‘তদন্তপূর্বক জরুরি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং একজন মেয়রপ্রার্থী হিসেবে আমার প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধানের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি যথাযথ নির্দেশনা জারির জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।’
দুই কাউন্সিল সমর্থকদের মারামারি : এদিকে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা উত্তর সিটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডের রাইনখোলায় গণসংযোগকালে উত্তরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলরপ্রার্থী ঠেলাগাড়ি প্রতীকের ফেরদৌস আহম্মেদ মিষ্টি ও বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী শাহ্ আলী যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রেডিও প্রতীকের দেওয়ান সোলায়মান সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দুজন রক্তাক্ত হন।
এ ঘটনায় যুবদলের ৫ জনকে আটক করে পুলিশ। ফেরদৌস আহম্মেদ মিষ্টি অভিযোগ করেন, এ হামলা বিদ্রোহী প্রার্থীর পূর্বপরিকল্পিত।
মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান আমাদের সময়কে জানান, ‘ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে বেশ কয়েকজনকে আটক করেছি