ঢাকা রবিবার, ১১ই মে ২০২৫, ২৮শে বৈশাখ ১৪৩২


মুজিববর্ষে ২৯৪ কর্মসূচি


৮ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৩১

আপডেট:
৮ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৩৭

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মবার্ষিকী আগামী ১৭ মার্চ। জাতির পিতার শততম এ বার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে সরকারের পাশাপাশি দলীয়ভাবেও কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। সরকারিভাবে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বছরব্যাপী দেশ-বিদেশে ২৯৪টি কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এর আগে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ১০ জানুয়ারি আতশবাজি উৎসবের মাধ্যমে শুরু হবে মুজিববর্ষের ক্ষণগণনা।

দেশ-বিদেশে ২৯৪ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্র, প্রমাণ্যচিত্র প্রদর্শনী, বঙ্গবন্ধুর নামে আন্তর্জাতিক পুরস্কার প্রবর্তন, ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড’ এবং হাতে হাত রেখে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রতিকৃতি গড়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড হিসেবে অন্তর্ভুক্তকরণ। রয়েছে বাংলা ও ইংরেজিতে স্মারক গ্রন্থ এবং বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত ভাষণ ইংরেজিসহ নানা ভাষায় প্রকাশের উদ্যোগ। এছাড়া কনসার্টসহ নানা আনন্দ আয়োজন ও রক্তদানসহ সেবাধর্মী কর্মসূচি থাকবে।

১৭ মার্চ মূল অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং বঙ্গবন্ধুর সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বকে। তাদের মধ্যে আছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ।

মুজিববর্ষ জুড়ে যে ২৯৪ কর্মসূচির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে তার একটি অনুলিপি দেশ রূপান্তরের হাতে এসেছে। এর মুখবন্ধে বলা হয়েছে, শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে সরকার গত বছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি’ ও ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি’ গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় কমিটির সভাপতি। স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রী, শিক্ষাবিদ, লেখক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, ক্রীড়াবিদ, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিকসহ সমাজের বিশিষ্টজন মিলিয়ে ১১৯ জন এ কমিটিতে আছেন। জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি। কমিটির মোট সদস্য ৭৯ জন। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব এবং জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, আগামী ১৭ মার্চ থেকে মুজিববর্ষ শুরু হচ্ছে। দেশ-বিদেশে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে জাঁকজমকপূর্ণভাবে। এ উদযাপনে সর্বস্তরের জণগণকে সম্পৃক্ত করা হবে। দেশ-বিদেশে নানা আয়োজনে বিভিন্ন দেশের স্বনামধন্য ব্যক্তিত্বরা উপস্থিত থাকবেন। সেই অনুযায়ীই আমাদের পরিকল্পনা সাজানো হচ্ছে।

মুজিববর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজনে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ বাস্তবায়ন কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দিচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও তথ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় জনবলও কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, অর্থ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ ও সংস্থা জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সঙ্গে জন্মশতবার্ষিকীর কার্যক্রমে সম্পৃক্ত রয়েছে।

জন্মশতবার্ষিকীর মূল আয়োজন শুরু হবে ১৭ মার্চ সূর্যোদয়ের সময়ই। সকালে ঢাকা ও দেশের বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। এদিন ঢাকা ও গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় একই সঙ্গে অনুষ্ঠান শুরু হবে। সকালে টুঙ্গিপাড়ায় থাকবে জাতীয় শিশু দিবসের নানান আয়োজন। এরপর বিকালে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে মূল আয়োজন। যাতে প্রকাশ করা হবে জন্মশতবার্ষিকীর বিভিন্ন স্যুভেনির, স্মারক বক্তৃতা, দেশি-বিদেশি শিল্পীদের সমন্বয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সারা দেশেই এদিন আয়োজন করা হবে আনন্দ র‌্যালি। সাজানো হবে গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা, সড়কদ্বীপ।

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ১৭ মার্চের মূল আয়োজনে থাকবেন বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান, বঙ্গবন্ধুর সমসাময়িক সময়ের রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিত্বরা। তাদের মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, ভুটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়েল ওয়াংচুক, জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন, ইউনেসকোর সাবেক মহাসচিব ইরিনা বুকোভা ও আরব লিগের সাবেক মহাসচিব আমর মুসা অংশ নিতে পারেন। আমন্ত্রণের তালিকায় থাকা আন্তর্জাতিক নেতাদের মধ্যে রয়েছেন ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি, ভারতের কংগ্রেস পার্টির গুরুত্বপূর্ণ নেতা সোনিয়া গান্ধী, বিজেপির নেতা ভারতের সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী এল কে আদভানি, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেল, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ প্রমুখ।

১৮ মার্চ জাতীয় সংসদে ডাকা হবে বিশেষ অধিবেশন, যাতে উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দেশ থেকে আসা আমন্ত্রিত অতিথিরা। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস ও ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে থাকবে নানা আয়োজন। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের মুজিবনগর সরকার দিবস উদযাপন করা হবে। ৭ জুন ছয় দফা দিবসের উদযাপন করা হবে সারা দেশে। ২৩ জুন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে রোজ গার্ডেনে হবে সেমিনার, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হবে সমাবেশ ও আনন্দ র‌্যালি। ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসকে কেন্দ্র করে আগস্ট মাসজুড়েই আওয়ামী লীগ ও উদযাপন কমিটি নানা আয়োজন করবে।

১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে সর্বপ্রথম বাংলায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু। তাই এ বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ভাষণ প্রদানের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হবে। একই দিন বাংলাদেশেও আলোচনা ও সেমিনার করা হবে। একইসঙ্গে দেশের সব স্থানের পাশাপাশি টিভি, রেডিও, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভাষণ প্রচার করা হবে। জেলহত্যা দিবস ও বুদ্ধিজীবী হত্যা দিবসে থাকবে আলোচনা সভা, সেমিনারসহ নানান আয়োজন। এবার বিজয় দিবস উদযাপন করা হবে অন্যান্য বারের চেয়ে অনেক বেশি জমকালোভাবে।

১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি জাতির জনককে বঙ্গবন্ধু উপাধি দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ওই দিনটিকে স্মরণীয়ভাবে উদযাপন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওইদিন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হবে। ২০২১ সালের ৭ মার্চ থেকে সাতদিনের কর্মসূচি ও জয় বাংলা কনসার্টের আয়োজন করা হবে।

মুজিববর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন ও বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিদেশে আরও পাঁচটি বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং এজন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজে বঙ্গবন্ধু সেন্টার স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউজ অব লর্ডসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন এবং উক্ত অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল এরকম গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হবে।

লন্ডনে মাদাম তুসো জাদুঘর এবং জাতিসংঘ সদর দপ্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রয়েছে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জীবন ও আদর্শভিত্তিক চিত্রকর্ম ও আলোকচিত্র প্রদর্শনী আয়োজন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনে মুজিব ফেলোশিপ অ্যান্ড ইন্টার্নশিপ প্রোগ্রাম চালু করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বিদেশ সফর নিয়ে একটি শর্টফিল্ম এবং ছবিগুলো নিয়ে একটি স্টিলফিল্ম বা ভিডিও তৈরি করা হবে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন শহরে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত সেমিনারের অডিও, ভিডিও ও স্থিরচিত্রের ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনীরও আয়োজন রয়েছে। ভারতের ত্রিপুরা, মেঘালয়, আসাম ও শিলংয়ে নাগরিক মিলনমেলা আয়োজন থাকবে। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে পৃথিবীর সব দেশে ১০০টি করে গাছের চারা রোপণ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্টজনদের নিয়ে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনার করা হবে। চলতি বছরের মে মাসে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউটে শেখ মুজিব ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা শীর্ষক সেমিনার করা হবে।


বাংলাদেশে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে সেমিনার, আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের হত্যাকা-ের নির্মমতা ও সাক্ষীদের জবানবন্দি নিয়ে সেমিনার, ওয়ার্কশপ ও আলোচনা সভা করা হবে।

অমর একুশে বইমেলা ২০২১ বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করা হবে। জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নভেম্বর মাসে ঢাকা আন্তর্জাতিক বইমেলা করা হবে। সারা দেশে থাকবে যাত্রা ও লোকনাট্য, জেলা পর্যায়ে ৬৩টি নৃত্যানুষ্ঠান আয়োজন। দেশ ও বিদেশে চারুকলার প্রদর্শন, যা ১০টি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে বৃহৎ আকারের (১০টি ৮ফুট/২৪ ফুট) ১০টি বাস্তবধর্মী চিত্রকর্ম আঁকা হবে। ১০টি নতুন মঞ্চনাটক, পথনাটক নির্মাণ করা হবে। ৬৪ জেলায় ১টি নাটক ও ১টি পথনাটক প্রদর্শন করা হবে। ৮টি বিভাগে ৮টি নাটক উৎসব হবে। বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলমান ৫০টি নাটককে সহায়তা প্রদান করা হবে। ৫টি শিশুনাটক নির্মাণ ও ২০টি প্রদর্শনী হবে। দেশব্যাপী শতকণ্ঠে আমার পরিচয় কবিতা, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় কবিতা ও তাকে নিয়ে রচিত কবিতা নিয়ে আবৃত্তি অনুষ্ঠান হবে। বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ থেকে ১ ঘণ্টার পা-ুলিপি নিয়ে ২টি অনুষ্ঠান করা হবে।

প্রকাশনা ও আন্তর্জাতিক প্রকাশনার মধ্যে রয়েছে ইংরেজিতে ছবি, স্কেচ ও আলোকচিত্র নিয়ে ‘কফি টেবিল বই শেখ মুজিব লাইফ অ্যান্ড টাইমস’ প্রকাশ। ব্রিফ বায়োগ্রাফি অব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব প্রকাশ করা হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের চীন সফর নিয়ে অনুবাদগ্রন্থ, বঙ্গবন্ধুর নির্বাচিত ভাষণ ইংরেজি ছাড়াও হিন্দি, উর্দু, ফরাসি, জার্মান, চাইনিজ, আরবি, ফার্সি, স্প্যানিশ, রুশ, ইটালিয়ান, কোরিয়ান, জাপানি অনুবাদ প্রকাশ করা হবে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনীভিত্তিক অ্যালবাম, জীবন ও কর্মভিত্তিক ১০০টি প্রকাশনা থাকবে।

বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ দূতাবাসে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, প্রদর্শনী, মেলার আয়োজন করা হবে। সুবিধাজনক সময়ে নিউ ইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার বা সেন্ট্রাল পার্ক ও লন্ডনের রয়্যাল অ্যালবার্ট হলে কনসার্ট আয়োজন করা হবে। ইউনেস্কোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বিশেষ আন্তর্জাতিক স্কাউট জাম্বুরি আয়োজন করা হবে গাজীপুরের মৌচাকে। এই বছরের ১৭ মার্চ থেকে আগামী বছরের ১৭ মার্চ পর্যন্ত জেলা ও থানা, দেশ ও বিদেশের বড় বড় শহরে ডিজিটাল স্ক্রিন স্থাপন করে নতুন নতুন কনটেন্ট সরবরাহ ও প্রচার করা হবে। সারা দেশে ১ হাজার ডিজিটাল ডিসপ্লে স্থাপন করে বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ওপর কনটেন্ট প্রচার করা হবে। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে অডিও ভিজ্যুয়াল প্রদর্শনীর আয়োজন থাকবে।

১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্র্তৃক প্রদত্ত স্বাধীনতার ঘোষণা ২৫টি দেশের যেসব গুরুত্বপূর্ণ পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তা সংগ্রহ ও প্রকাশ করা হবে। ইউটিউব, ফেইসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে নিয়ে নির্মিত কনটেন্ট আপলোড করা হবে। সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে জাতীয় সংবাদে গুরুত্বের সঙ্গে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্বাচিত ভাষণের অংশবিশেষ এবং জন্মশতবার্ষিকীর খবর প্রচার করা হবে।

বঙ্গবন্ধুর নামে একটি আর্কাইভ স্থাপন করে সেখানে তাকে নিয়ে প্রকাশিত সব লেখা ও অডিও-ভিডিও প্রকাশনা রাখা হবে। দেশের সব লাইব্রেরিতে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার স্থাপন করা হবে। ট্রেন ও জাহাজে জন্মশতবার্ষিকীর লোগো/ট্যাগ লাইন দিয়ে সাজানো হবে। চালু করা হবে বিশেষ ট্রেন (ফ্রি) সার্ভিস।

হালদা নদীকে ‘বঙ্গবন্ধু মৎস্য হেরিটেজ’ ঘোষণা করা হবে। জীবিত মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আয়োজন থাকবে। সারা দেশে জেলা/উপজেলায় সপ্তাহব্যাপী মুজিব মেলার আয়োজন করা হবে। বছরব্যাপী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বিভিন্ন ঘটনা ও স্থান নিয়ে ৬৪ জেলায় চিত্রায়ণপূর্বক ‘আমাদের বঙ্গবন্ধু’ শিরোনামে ৬৪টি অনুষ্ঠান নির্মাণ ও প্রচার করা হবে।

ব্যক্তিজীবনে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়ামোদী ছিলেন। ফুটবল খেলতেন। তাই মুজিববর্ষে ফুটবল, ক্রিকেটসহ বিভিন্ন খেলা আয়োজন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আন্তর্জাতিক গোল্ডকাপ ফুটবল-২০২০, ২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ক্রিকেট ম্যাচ। জাতির পিতার নামে আন্তর্জাতিক হকি টুর্নামেন্ট, আন্তর্জাতিক সাফ অ্যাথলেটিকস্ চ্যাম্পিয়নশিপ, বিশ্ব কাবাডি প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক ভলিবল প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক রোলবল গোল্ডকাপ, আন্তর্জাতিক হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতা, ইন্টারন্যাশনাল এয়ারগান চ্যাম্পিয়নশিপ, আন্তর্জাতিক বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতা, ইন্টান্যাশনাল আরচ্যারি চ্যাম্পিয়নশিপ, থ্রি অন থ্রি (বিচ) বাস্কেটবল চ্যাম্পিয়নশিপ, আন্তর্জাতিক মহিলা বাস্কেটবল প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক গ্র্যান্ডমাস্টারস দাবা প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক টেবিল টেনিস টুর্নামেন্ট, আন্তর্জাতিক টেনিস প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক জিমন্যাস্টিকস্ প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা, মহা ঘুড়ি উৎসব, সাফ জুনিয়র বক্সিং টুর্নামেন্ট, আন্তর্জাতিক ইয়োগা প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক তায়কোয়ানডো, আন্তর্জাতিক খো খো, আন্তর্জাতিক কারাতে প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক জুডো প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক মার্শাল আর্ট প্রতিযোগিতা, সাউথ এশিয়ান ওয়েটলিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ, আন্তর্জাতিক কিকবক্সিং প্রতিযোগিতা, আন্তর্জাতিক ফিজিক্যালি চ্যালেঞ্জড ক্রিকেট টুর্নামেন্টসহ জাতীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।