নিলুফা ভিলায় সোয়াতের অভিযান শুরু
নরসিংদীর মাধবদী পৌর এলাকার ছোট গদাইরচর গাঙপাড় এলাকায় ‘নিলুফা ভিলা’ নামে সাততলা বাড়িতে সোয়াত টিমের অভিযান শুরু হয়েছে। সেখান থেকে বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যাচ্ছে। বুধবার বেলা ১১টা ৫০ মিনিট থেকে এ বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়।
এই অভিযানকে ঘিরে সকাল থেকে ওই ভবনের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। নিলুফা ভিলার ৫০০ মিটারের মধ্যে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। সকালে ড্রোন উড়িয়ে জঙ্গি আস্তানাসহ পুরো এলাকা পর্যবেক্ষণ করতে শুরু করে পুলিশ। ঘনবসতিপূর্ণ এই এলাকার আশপাশের লোকজনকে নিরাপদ দূরত্বে সরে যেতে বলা হয়েছে। সেখানকার কয়েকটি মার্কেটের দোকানপাট এবং ছয়টি ব্যাংকের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে ভবনটির ভেতর মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদেরও।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল যেখানে অভিযান চালানো হয়েছিল, সেখানকার মতো এখানের জঙ্গিদেরও আত্মসমর্পণের চেষ্টা করেছি। দফায় দফায় তাদের নিগোশিয়েশনের নিয়ে আসার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাদের অভয় দেয়া হয়েছে যে যেহেতু তাদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ নেই, সেহেতু তাদের লঘু শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা সংলাপে আসছে না।
মনিরুল ইসলাম বলেন, নিগোশিয়েশনে দক্ষ এমন একটি দক্ষ টিম ঢাকা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে তাদের সংলাপে নিয়ে আসা যায়। কারণ আমরা একটি রক্তপাতহীন অভিযান চালাতে চাই। যখন কোনো উপায়ন্তর থাকবে না, তখনই কেবল অভিযান শুরু হবে। এসময় ওই বাড়িটতে অন্তত দুই জঙ্গি সেখানে রয়েছে ও তাদের কাছে বিস্ফোরক আছে বলে তিনি জানান।
মঙ্গলবারের অভিযানে নিহতদের সম্পর্কে মনিরুল বলেন, তাদের হাতে ছাপ নেয়া হয়েছে। সেগুলো জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হবে। ডিএনএর নমুনা নেয়া হয়েছে। আমাদের সন্দেহ, অতীতে তারা জঙ্গি কাজে জড়িত ছিলেন। তাদের সন্দেহভাজন সন্ত্রাসী বলে মনে করছি। এছাড়া দুটি বাড়ির মালিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি আবদুল্লাহ আল মামুনসহ ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের ওই আস্তানার দিকে এগিয়ে যেতে দেখা গেছে সোয়াত সদস্যদের।
নিলুফা ভিলার মালিক হাজী আফজাল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয় তলা পর্যন্ত রয়েছে মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসা। ভবনটির পঞ্চম তলার একটি ফ্ল্যাটে জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। চলতি মাসের ৭ তারিখে ওই বাসাভাড়া নেয়া হয়েছে বলে বাড়ির মালিকদের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়।
