খাগড়াছড়িতে ইউপিডিএফ ও জেএসএস সংঘর্ষে নিহত ৪

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার দুর্গম নাড়াইছড়িতে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনায় চারজন নিহতের খবর দিয়েছে পুলিশ।
গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ (প্রসিত) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি-জেএসএস (সন্তু) সদস্যদের মধ্যে এ গোলাগুলি হয় বলে জানিয়েছেন দীঘিনালা থানার ওসি মো. জাকারিয়া।
ওসি বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সিন্ধু কারবারিপাড়া এলাকায় ইউপিডিএফের সামরিক কমান্ডার বিপ্লব চাকমা নেতৃত্বাধীন ৪০-৪৫ জনের একটি দলের মুখোমুখি হয় জেএসএসের সামরিক কমান্ডার জয়দেব চাকমা নেতৃত্বাধীন ৩৫-৪০ জনের আরেকটি দল। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক গুলিবিনিময় হয়। এতে ইউপিডিএফ (প্রসিত)-এর সামরিক শাখা ‘গণমুক্তি ফৌজ’ বা ‘পিপলস্ লিবারেশন আর্মি’র চার সদস্য নিহত হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে।
তবে নিহতদের নাম-ঠিকানা এখনো জানাতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান ওসি।
তবে ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা দাবি করেছেন, এই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
শনিবার সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, এ গোলাগুলির ঘটনা সংঘটিত হওয়ার কোনো তথ্য ইউপিডিএফের জানা নেই এবং ইউপিডিএফ একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে ‘গণমুক্তি ফৌজ’ বা ‘পিপলস্ লিবারেশন আর্মি’ নামে তার কোনো সামরিক শাখা থাকার প্রশ্ন একেবারে অবান্তর ও কাল্পনিক।
ভাইবোনছড়ায় ত্রিপুরা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের বিরুদ্ধে চলমান আন্দোলন থেকে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করতে একটি বিশেষ স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দুরভিসন্ধিমূলক মিথ্যা প্রচারে নেমেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
১৯৯৭ সালে সরকার এবং জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) মধ্যে পার্বত্য শান্তি চুক্তির পর তার বিরোধিতা করে প্রসিত বিকাশ খিসার নেতৃত্বে গড়ে ওঠে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)।
সেই থেকে দুই দলের বিরোধে ২০১৬ পর্যন্ত সশস্ত্র সংঘাতে মারা গেছে প্রায় এক হাজার নেতা-কর্মী। ২০১৬ সালে দুই দলের মধ্যে অলিখিত ও অপ্রকাশ্য এক সমঝোতায় সশস্ত্র সংঘাত থামলে কিছুটা স্বস্তি আসে পাহাড়িদের মনে। কিন্তু এরই মধ্যে জেএসএস থেকে বেরিয়ে জেএসএস (এমএন লারমা) এবং ইউপিডিএফ ভেঙে ইউপিডিএফ (গণতান্ত্রিক) দল গড়ে ওঠে, যা সংঘাতে আনে নতুন মাত্রা।