শরীয়তপুর ডিসির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে সমালোচনার ঝড়

এক নারীর সঙ্গে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসকের ভিডিও নিয়ে বইছে সমালোচনার ঝড়।
শুক্রবার সকালে এক প্রবাসী সাংবাদিক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ৫৭ সেকেন্ডের এই ভিডিও ছড়িয়ে দেন। তাতে বলা হয়, শরীয়তপুরের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ওই নারীকে ‘বিয়ের স্বপ্ন’ দেখিয়েছিলেন।
এ ব্যাপারে জানার জন্য জেলা প্রশাসক আশরাফ উদ্দিনকে মোবাইল ও হোয়াটস অ্যাপে একাধিকবার কল করলেও তিনি ধরেননি।
ভিডিওতে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে থাকা নারীর সঙ্গে কথা বলতে পেরেছেন স্থানীয় সাংবাদিকরা। তার বাড়ি ময়মনসিংহে, তবে পরিবার নিয়ে থাকেন ঢাকায়। ওই নারী বলেছেন, “উনি (জেলা প্রশাসক) আমার নিকটাত্মীয়। আমাকে বিয়ের কথা বলে আমার স্বামীর সঙ্গে ডিভোর্স করিয়েছে। তিনি আমার সংসার, সমাজ ধ্বংস করে পথে বসিয়েছে। এখন আমাকে বিয়ে না করে, উল্টো মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। সে এর আগে আমাকে শারীরিকভাবে মারধর করেছে। সে আমাকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করে তার প্রতি আসক্ত করেছে। সে এখন কলঙ্কিনী বানিয়ে আমাকে ছেড়ে দিয়েছে। তার জন্য কোথাও আমি মুখ দেখাতে পারি না। কিন্তু সে রাজার হালে রয়েছে। কোটি কোটি টাকা কামাবে সেই ধান্ধা করছে। ওর কারণে দুটি সংসার নষ্ট হয়ে গেছে। আমি এখন তার বিচার চাই।”
এদিকে ভিডিও প্রকাশের পর এ নিয়ে শহরজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়েছে। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, “ডিসি তার চরিত্র ধরে রাখতে পারেননি। ডিসির কাছ থেকে এ ধরনের কাজ কেউ প্রত্যাশা করে না। তার এমন অপ্রত্যাশিত ভিডিও বা ছবি ভাইরাল হবে এটা আমরা বা জনগণ কেউ প্রত্যাশা করিনি।”
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার হওয়া উচিত বলে মনে করেন ছাত্রনেতা ইমরান আল নাজির। নাগরিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত আইনজীবী আজিজুর রহমান রোকন বলেন, “ডিসির মত একজন সরকারি পদাধিকারীর এ ধরনের নোংমারি খুবই দুঃখজনক।”
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, আশরাফ উদ্দিন ২০২৪ সালের ৩ নভেম্বর শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা।
বছর ছয়েক আগে ২০১৯ সালে নারী অফিস সহকারীর সঙ্গে জামালপুরের তৎকালীন জেলা প্রশাসক আহমেদ কবীরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছিল। পরে তাকে বিভাগীয় তদন্ত কমিটির সুপারিশে শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়।