সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে খাদ্য পথ্য সরবরাহ নিয়ে অপপ্রচার: জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা

সিন্ডিকেটে জিম্মি সাতক্ষীরা স্বাস্থ্য বিভাগ এ প্রসঙ্গে প্রকাশিত একটি খবরে সরকারী হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগী ও সংশ্লিষ্ট সিভিল সার্জনসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তি, হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীদের নিকট থেকে পাওয়া তথ্যে রোগীদের পথ্য সরবরাহের অনিয়ম দুর্নীতি ও নি¤œ মানের মালামাল সরবরাহের কোন তথ্য পওয়া যায়নি। পুরাতন দরে পথ্য সরবরাহ অব্যাহত থাকায় সরকার ও রোগীরা ১২৫ টাকায় দৈনিক বরাদ্দের টাকায় বর্তমান বাজার দর অনুযায়ী পূর্বের দরে মালামাল গ্রহণ করায় পণ্যের পরিমাণ বেশি পাচ্ছেন। সিন্ডিকেট করে ব্যক্তিগত লাভবান হওয়া থেকে বঞ্চিতরা কাল্পনিক তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরী করায় অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে একটি স্বার্থনেষী চক্র। একাধিক সূত্র থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, দরপত্র সংক্রান্ত একটি মামলায় টেন্ডার কার্যক্রমের উপর বিজ্ঞ সাতক্ষীরা যুগ্ম জেলা জর্জ আদালতে মূল মামলা নিষ্পর্তি না হওয়া পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করেন। দেওয়ানী মামলা নং ২২/২০১৪। উক্ত মামলাটি বিজ্ঞ দায়রা জর্জ আদালতে বিচারাধীন থাকায় পূর্ব ঠিকাদার পূর্বের দরপত্র কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত দরে পথ্য সরবরাহ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ১ নং ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগী কেসমত মোড়ল(৮০) পিতা মৃত. বুধুই মোড়ল বেড নং ০৩ জানান, সকালে ১ টি কলা, ১টি ডিম, ১টি পাউরুটি ও অনুমান ২৫ গ্রাম চিনি নাস্তা পেয়েছেন। দুপুরে অনুমান প্রায় ২০০ গ্রাম চাউলের ভাত , ১ পিছ রুই মাছ,আলু দিয়ে একটি তরকারী ও ডাউল পেয়েছেন। রাতের খাবার উল্লেখিত আকারে দেওয়া হয়। ১ নং ওয়ার্ডের আজমীর সরদার(২৪) বেড নং ১০,ওয়ার্ড নং ০২ ও মোঃ তফের আলী মোল্লা(৫০) বেড নং ০৯ সহ সকল ভর্তি রোগীরা জানান তারা উক্ত প্রকারের পথ্য খাদ্য সরবরাহ পেয়েছেন। ২ নং ওয়ার্ডের ভর্তিকৃত রোগী রফিকুল ইসলাম মিস্ত্রি (৬৭) পিতা মৃত আলেক মিস্ত্রি বেড নং ১০ জানান, তিনি ৫ দিন ভর্তি আছেন তাকে কোন খাদ্য পথ্য দেওয়া হয়নি। এ সংক্রান্ত সরকারী বাবুচ্চি মোঃ রেজাউল ইসলাম বাবু জানান, প্রতিদিন ১০০ জনের খাদ্য পথ্য সরকারী ভাবে বরাদ্দ। কিন্তু অত্র হাসপাতালে প্রতিদিন রোগী ভর্তি থাকেন ১৬০-১৮০ জন। খাবার পাবে ১০০ জন বাকীরা সরকারী বরাদ্দ না থাকায় তারা খাদ্য পায়না না খেয়ে থাকে। মানিক মোড়ল(৯৬) ওয়ার্ড-২, বেড নং-০৮ জানান, তিনি ৪ দিন ভর্তি খাদ্য পাননি। তিনি দাবি করেন, ভর্তিকৃত সকল রোগীদের ঔষধ দেওয়া হয়,বালিশ বেড শীট দেওয়া হয় তাহলে তাদের খাদ্য দেওয়া না কেন। অনেক রোগী আছেন তাদের দেখার কেউ নেই তারা কিভাবে বেঁচে থাকবে। না খেয়ে কি চিকিৎসা গ্রহন করা সম্ভব! সকল ভর্তিকৃত রোগীদের সরকারী খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা গ্রহন এবং দৈনিক রোগী প্রতি ২৫০ টাকা সরকারী ভাবে বরাদ্দ প্রদানের দাবি জানান। আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ ফয়সাল আহমেদ জানান, রোগীদের দৈনিক খাদ্য তালিকা অনুযায়ী ঠিকাদারের নিকট থেকে মালামাল বুঝে নেওয়া হয়। রোগীদের নিন্ম মানের খাদ্য সরবরাহ বা পরিমানে কম নেওয়ার সুযোগ নেই। সরবরাহকারী এস.এম নজরুল ইসলাম জানান, তিনি কতৃপক্ষের দৈনিক চাহিদা মোতাবেক সুনামের সাথে দীর্ঘদিন রোগীদের খাদ্য পথ্য ধোলাই, সরবরাহ করিয়া আসিতেছেন। তার প্রতিপক্ষ একজন ঠিকাদার তিনি ঠিকাদারী কাজটি পাওয়ার জন্য তার ব্যক্তি স্বার্থে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তার উদ্দেশ্য বর্তমান সরবরাহকারীর সুনাম ক্ষুন্ন করে কাজটি কিভাবে বাগিয়ে নেওয়া যায়। এ ধরনের অপপ্রচার রুখতে সাংবাদিক সহ সকল সচেতন জনগণের প্রতি তিনি দাবি জানান, অপপ্রচারে কান না দিয়ে দৈনিক মালামাল গ্রহণের সময় স্বচক্ষে খতিয়ে দেখার জন্য সকলের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আঃ সালাম জানান. দৈনিক রোগীদের পথ্য খাদ্য তালিকা অনুযায়ী সম্পুর্ণ মালামাল গ্রহন করা হয়। পুরাতন দরপত্র অনুযায়ী মালামাল গ্রহন করা হয়। সরবরাহকারীর নিকট থেকে নিন্ম মানের বা পরিমাণে কম মাল গ্রহণ করা হয়না। বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন মামলাটি নিষ্পত্তির পর পুনঃদরপত্র আহŸান করা হবে।