ঢাকা মঙ্গলবার, ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২রা আশ্বিন ১৪৩১


মাগুরায় বিজ্ঞানী মাদাম কুরী স্মরণে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতা


৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:১১

আপডেট:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০০:৫৭

 

বিজ্ঞানী মাদাম কুরী স্মরণে শনিবার ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় বিজ্ঞান পাঠাগার মিলনায়তনে বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার উদ্যোগে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চের মাগুরা জেলা শাখার সমন্বয়ক প্রকৌশলী শম্পা বসুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন মাগুরা সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হাকিম বিশ্বাস ও শ্রীপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত কুমার বিশ্বাস। সভা পরিচালনা করেন বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ মাগুরা জেলা শাখার সংগঠক ভবতোষ বিশ্বাস জয়।

বক্তারা বলেন, মাদাম কুরি ১৮৬৭ সালে পরাধীন পোল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকলীন সময়ে পোল্যান্ডে একটি ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয় ছিল সেখানে মেয়েরা ভর্তি হতে পারতো না। মাদাম কুরী প্যারিসের সরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন এবং পরবর্তীতে বিজ্ঞান গবেষণায় মনোনিবেশ করেন। তৎকলীন সময়ে নারীদের জন্য বিজ্ঞান চর্চা করাটা সহজ ছিল না। সেই যুগে মাদাম কুরী সকল সংস্কার ও বাধা অতিক্রম করে বিজ্ঞানের জগতে এগিয়ে গেছেন। আবিষ্কার করেছেন বেশ কয়েকটি তেজস্ক্রিয় মৌল। তেজস্ক্রিয়তা সম্পর্কে অনেক মৌলিক গবেষণা রয়েছে তাঁর। পৃথিবীর একমাত্র বিজ্ঞানী যিনি বিজ্ঞানের দুটি শাখায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন।

১৯০৩ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে এবং ১৯১১ সালে রসায়নে। তিনি বিশ্ববিখ্যাত সরবন বিশ্ববিদ্যালয় তথা ফরাসি দেশের প্রথম মহিলা অধ্যাপক ছিলেন। কেবলমাত্র নোবেল পুরস্কার পাওয়া বিজ্ঞানী হিসেবে নন, মানবকল্যাণে  নিবেদিত প্রাণ, জ্ঞানের জন্য অপার তৃষ্ণা, গভীর দেশপ্রেম, উদারতা, সামাজিক দায়িত্ববোধ--এমন অনেক মানবিক গুণের অধিকারী ছিলেন তিনি। বিজ্ঞানী হয়ে, বড় মানুষ হয়ে কেউ জন্মায় না। একজন মানুষের সংগ্রামই তাকে বড় মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

মানবকল্যাণে উৎসর্গকৃত এক সাধকের জীবন ছিল যেন তাঁর। মানবসমাজের মঙ্গলের জন্য জীবনকে নিবেদন করার এই মনোভাব তাঁকে অন্যন্য সাধারণ একজন বিজ্ঞানীতে পরিণত করেছিল। তাই আর্থিক অসচ্ছলতা থাকলেও ‘রেডিয়াম’ কে পেটেন্ট করেননি। পেটেন্ট করলে কোটি কোটি টাকার মালিক হতে পারতেন। কিন্তু বিজ্ঞানের আবিষ্কারকে কিছু মানুষের মুনাফা তৈরির হাতিয়ার করতে দিতে চাননি। বিজ্ঞান সবার জন্য--এই ছিল তাঁর মনোভাব। যত রেডিয়াম তিনি শোধন করেছিলেন বা উপহার পেয়েছিলেন তা সবই ল্যাবরেটরিতে দান করে গেছেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় অনেক অসুস্থ অবস্থায় জীবনের পরোয়া না করে এক্স-রে মেশিন তৈরি করেছেন, মেশিন পরিচালনার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যুদ্ধক্ষেত্রে সেবা পৌঁছে দিয়েছেন। মাদাম কুরীর ৬৬ বছরের বর্ণাঢ্য ও সংগ্রামী জীবন এবং তাঁর গবেষণা এই ছোট্ট আলোচনা সভায় তুলে ধরা খুব কঠিন।

নারীদের সম্পর্কে সমাজের সংস্কার ভাঙ্গতে এবং মানবকল্যাণে নিবেদিত বড় মানুষ হওয়ার আকাক্ষা জাগাতে বিজ্ঞানী মাদাম কুরীর জীবন সংগ্রাম ও কাজ অনুপ্রেরণা তৈরি করবে বলে প্রত্যাশা করেন আলোচনা সভার আয়োজকরা।