নেছারাবাদে চাঁদা না দেয়ায় বাবা-ছেলেকে রড দিয়ে পেটানোর অভিযোগ

পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলার সমুদয় কাটি ইউনিয়নের মৈশানি গ্রামে পাঁচ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেয়ায় ননী গোপাল সরকার (৬২) ও তার ছেলে শম্ভু সরকারকে (৪৪) রড দিয়ে বেদম পেটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে নয়ন গাজী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। নয়ন গাজী একই গ্রামের মৃত হাফিজুর রহমান গাজীর ছেলে।
রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে উপজেলার সমুদয়কাঠি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের মৈশানি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয়রা আহত বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। তাদের মধ্যে ছেলে শম্ভু সরকারের অবস্থা গুরুতর। এখন হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে তাকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাঃ লিমা আক্তার বলেন, আহত শম্ভু সরকারের অবস্থা বেশ গুরুতর। তিনি মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন।
ননী গোপাল সরকারের মেয়ে খুকু রানী দাস বলেন, নয়ন গাজী কয়েকদিন যাবত আমার বাবার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। কিন্তু তার হুমকির ভয়ে এই বিষয়ে কারো সাথে শেয়ার করিনি। তাছাড়া আমাদের কাছে নগদ কোন টাকা পয়সা নেই বলে জোর করে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাঁপ সৃষ্টি করছিল। আজকে সকালেও একাধিকবার টাকা অথবা জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাঁপ সৃষ্টি করেছিলেন। দিতে না রাজি হলে নয়ন গাজী রড দিয়ে আমার ভাইয়ের (শম্ভু সরকার) শরীরে এলোপাথাড়ি পিটিয়েছেন।
চিকিৎসাধীন ননী গোপাল সরকার বলেন, আমি শেখেরহাট বাজারে গিয়েছিলাম নিত্যপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে। এ সময় আমার ছেলেকে পিটাচ্ছে শুনে বাড়িতে আসলে আমাকেও বেদম মেরেছে নয়ন গাজী। আমি অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। এখন বৃদ্ধ জনিত কারণে কোন কাজ করতে পারছি না। আমার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করছিল দীর্ঘদিন ধরে। আমার ব্যাংকেও নগদ কোন টাকা নেই। আমি এর সঠিক বিচার চাই।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত নয়ন গাজী মুঠোফোনে বলেন, ননী গোপাল সরকারের সাথে জায়গা জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে। আমি ওই পরিবারের কাছে ৬১.৫ শতাংশ জমি পাই। কোর্টে মামলা চলমান। আজ সকালে ওই জায়গায় গাছের বেপারী এনে গাছ বিক্রি করছিলো শম্ভু সরকার। আমি বাঁধা দিলে তাদের সাথে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। রট দিয়ে পিটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে রড দিয়ে পিটানো হয়নি, চিকন ধরনের কোন লাঠি/কঞ্চি দিয়ে নিজেকে আত্মরক্ষার জন্য দুই একটি আঘাত হয়তো ওদের গায়ে লাগতে পারে।
এ বিষয়ে নেছারাবাদ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বনি আমিন বলেন, এ ঘটনা শুনেছি। খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি। মামলা হলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।