ঢাকা শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে আ.লীগ নেতার মামলা


৩০ মার্চ ২০২৩ ০৩:৪৬

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:৫৯

ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির অভিযোগে আ.লীগ নেতার মামলা

কেরানীগঞ্জ মডেল থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমাম হাসানের বিরুদ্ধে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে মামলা হয়েছে। কালিন্দী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এহসান উদ্দিন আহমেদ বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় ইমাম হাসান ছাড়াও তার ভাই ইমাম হোসেন, ছাত্রলীগ নেতা শিমুল, খান মন্টি, অনিকসহ অজ্ঞাতনামা ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। চাঁদাবাজির পাশাপাশি হামলা ও চুরির অভিযোগও আনা হয়েছে মামলায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এহসান উদ্দিন জানান, রাজনীতির পাশাপাশি তিনি যৌথভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু ভরাটের কাজ করেন। আতাশুর এলাকায় ‘কালিন্দী মডেল টাউন’ নামে একটি আবাসন প্রজেক্টে তারা বালু ভরাটের জন্য মালিক-পক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। সেই অনুযায়ী ভরাটের জন্য ড্রেনেজের পাইপ বসানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এ অবস্থায় ১৯ মার্চ সন্ধ্যায় আমি, আমার ব্যবসায়িক অংশীদার পিন্টু ও মাসুম রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। এ সময় ইমাম হাসান ও ইমাম হোসেন সেখানে উপস্থিত হয়ে ওই প্রজেক্টে কাজ বন্ধ রাখতে বলে। প্রজেক্টে ওরা বালু ভরাট করবে বলে জানায়। আমি তখন বলি, আমরাতো প্রজেক্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে গেছি। কাজ চলমান রয়েছে। এ অবস্থায় কাজ বন্ধ করা সম্ভব না। ওরা বলে- কাজ বন্ধ না রাখলে ওদের ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। এরপর ওরা চলে যায়।

এহসান উদ্দিন অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার দুপুর ২টার দিকে ইমাম হাসানের নেতৃত্বে ৩০-৩৫ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রজেক্টে ঢুকে চলমান কাজের ক্ষতিসাধন করে। তারা বসানো পাইপ লাইন অপসারণ করে ফেলে এবং অন্যান্য সামগ্রী ভাংচুর করে। এতে আমার ১ লাখ ৬০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও হামলাকারীরা পাইপের নাট-বল্টু খুলে চুরি করেছে; যার মূল্য প্রায় ১১ হাজার ৬০০ টাকা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে কাজ বন্ধ না রাখলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ওরা চলে যায়।

মোবাইল ফোনে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমাম হাসান বলেন, এসব মিথ্যা অভিযোগ। আমাদের এখানে আওয়ামী লীগের দুটি গ্রুপ রয়েছে। প্রতিপক্ষ গ্রুপের লোকজন যড়যন্ত্র করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে।

ঘটনা মিথ্যা হলে পুলিশ কেন মামলা নিল? এমন প্রশ্নে তিনি স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দোষারোপ করে বলেন, তার চাপে পড়েই পুলিশ মামলা নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ড্রেনেজের পাইপ প্রজেক্টে নেওয়ার জন্য তারা সরকারি রাস্তা কেটে ফেলেছে। আমি প্রতিবাদ করায় তারা মিথ্যা মামলা দিয়েছে।

এদিকে বুধবার দুপুরে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার উপ-পরিদর্শক ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোহেল মুফতি ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষ্য নেন। তবে তিনি এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কিছু বলতে রাজি হননি।

চাঁদা দাবির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেরানীগঞ্জ মডেল থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমাম হাসান বলেন, ‘রাজনীতি ফায়দা হাসিল করার জন্যে উদ্দেশ্যেপ্রণোদিতভাবে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এহসান উদ্দিনকে আমি চিনি না, কখনো দেখিনি। আমি কারও কাছ থেকে চাঁদা দাবি করিনি।

কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন অর রশিদ বলেন, ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।